পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৫ নভেম্বর: উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে আজ থেকে উঠে গেল মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট বা আদর্শ আচরণ বিধি (MCC)। সোমবার দুপুরে মেদিনীপুর শহরে নিজের কার্যালয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে সরকারি এই ঘোষণা করেন জেলাশাসক খুরশিদ আলী কদেরী। এর সঙ্গে সঙ্গেই ‘বাংলার বাড়ি’ (আবাস যোজনা) এবং ‘বাংলার শস্য বীমা যোজনা’ সংক্রান্ত সুখবরও শুনিয়েছেন জেলাশাসক।
জেলাবাসীকে আশ্বস্ত করে তিনি জানিয়েছেন, “২০২১-২২ সালে ‘বাংলার বাড়ি’ (প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা)-র জন্য ৩ লক্ষ ৮ হাজার ৪৬৪-টি আবেদন জমা পড়েছে। আজ (সোমবার) থেকেই আবেদনকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করার কাজ শুরু হবে।” এরজন্য প্রায় ১৩০০টি সমীক্ষক দল গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক। এই ১৩০০টি দল প্রতিদিন জেলার প্রায় ৩০ হাজার বাড়ি (৩ লক্ষ আবেদনকারীদের মধ্যে) সমীক্ষা করবে।
জেলাশাসক এদিন এও জানিয়েছেন, এই তালিকা থেকে কিছু সংযোজন ও বিয়োজন হবে। ঘাটালের বন্যা এবং ‘ডানা’ দুর্যোগের প্রভাবে অনেকেরই বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁরা আবেদন করলে তাঁদের নাম তালিকায় আসবে। তবে, কিছু নাম বাদও যেতে পারে বর্তমান সমীক্ষা অনুযায়ী। যে সমস্ত উপভোক্তা লোন করে অসম্পূর্ণ বাড়ি ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ করেছেন, তাঁদের বিষয়টিও সরকার ভেবে দেখবে বলে এদিন জানিয়েছেন জেলা শাসক। এই পুরো প্রক্রিয়াটি ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করা হবে বলে তিনি জানান।
এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, দু’দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ৬০ শতাংশ টাকা কেন্দ্র দেয়, রাজ্য দেয় ৪০ শতাংশ টাকা। সেই টাকাও কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে। তাই, এই প্রকল্পের নাম তিনি ‘বাংলার বাড়ি’ রাখছেন। রাজ্যের ৩৬ লক্ষ আবেদনকারীদের মধ্যে আগামী ১৫ থেকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ১২ লক্ষ উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা ঢুকে যাবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেক্ষেত্রে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ৩ লক্ষ আবেদনকারীর মধ্যে লক্ষাধিক উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রথম কিস্তির টাকা ঢুকবে বলে মনে করা হচ্ছে। বাকিরা ওয়েটিং লিস্টে থাকবেন।
অন্যদিকে, ‘বাংলার শস্য বীমা যোজনা’ নিয়েও জেলার কৃষকদের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু খুশির খবর শুনিয়েছেন জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরী। তিনি জানিয়েছেন, খরিফ শস্যের জন্য প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ (৭ লক্ষ ৫২ হাজারের কিছু বেশি) আবেদন জমা পড়েছে। এবার আলু সহ রবি শস্যের জন্য আবেদন নেওয়ার কাজ শুরু হবে দু’একদিনের মধ্যেই। সেই সঙ্গে জেলার আলু চাষিদেরও ‘সুখবর’ দিয়েছেন তিনি। এখন থেকে আর বাংলার শস্য বীমাতে আলু চাষিদের কিস্তি জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। রাজ্য সরকারই চাষিদের হয়ে পুরো কিস্তি জমা দেবে। গড়বেতা সহ জেলার আলু বেল্টের কৃষকদের ক্ষেত্রে এটা নিঃসন্দেহে খুশির খবর বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক।