পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ৩ ডিসেম্বর: সম্প্রতি বাংলাদেশের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে জেহাদি ও সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা সংখ্যালঘু হিন্দু এবং মডারেট মুসলমানদের উপর বর্বরোচিত আক্রমণ এবং ভারতের পতাকাকে পদদলিত করার জন্য রাজ্যসভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে ডেপুটেশন দিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলো ভারতবর্ষের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার প্রতিনিধি মন্ডল।
ইতিপূর্বেই বাংলাদেশে চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, তাঁর আইনজীবী রমেন রায়ের ওপর প্রাণঘাতী আক্রমণ, এমনকি নারী ও শিশুরাও মৌলবাদীদের দ্বারা আক্রমণের শিকার হচ্ছেন বলে ভারতে চিকিৎসা করতে আসা বাংলাদেশিদের সামাজিক ভাবে বয়কট করার পদক্ষেপ অখিল ভারত হিন্দু মহাসভাই সর্বপ্রথম গ্রহণ করেছে।
হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বক্তব্য, আমরা একবারও বলছি না যে, বাংলাদেশ থেকে আসা সমস্ত মুসলমান ধর্মাবলম্বীরা খারাপ বা সন্ত্রাসবাদী। কিন্তু এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই যে বাংলাদেশের নারকীয় গণহত্যা এবং ভারতীয় পতাকাকে পদদলিত করার পাপ যারা করছে তারা ইসলামিক মৌলবাদীদের ইন্ধনেই মদতপুষ্ট। তারা বিস্মৃত হয়েছে যে পৃথিবীর মানচিত্রে আজ স্বাধীন বাংলাদেশ বলে যে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব রয়েছে সেটি ভারতীয় জওয়ানদের আত্মবলিদানের ফলেই জন্মলাভ করেছে। বাংলাদেশের পতাকার উদীয়মান সূর্যের লাল রঙ এত গাঢ় ঐ ভারতীয় জওয়ানদের চাপ চাপ রক্তের বিনিময়েই। তাই নিজের ও পরিজনের প্রাণ বাঁচাতে ভারতে আসা বাংলাদেশি মুসলমানরা সন্ত্রাসী জিহাদীদের পক্ষে, নাকি তারা ধর্মনিরপেক্ষ মডারেট মুসলমানদের পক্ষে সেটা ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে যাচাই করার দায়িত্ব ভারতীয়রা নিয়ে রাখেনি। দেশে ফিরে এই বাংলাদেশিদেরকেই ওই সন্ত্রাসীদের কলার ধরে বলতে হবে যে ওই সন্ত্রাসী মৌলবাদীরা আসলে মানবতার শত্রু। ওই নরপিশাচদের কু- কর্মের জন্যই সারা পৃথিবীতে ইসলাম ধর্ম কালিমালিপ্ত হচ্ছে এবং বাংলাদেশিরা ঘৃণিত ও নিন্দিত হচ্ছে। তাই যতদিন না বাংলাদেশ ভারতের পতাকা মাথায় নিয়ে পারস্মরিক সম্মান দেখাচ্ছে এবং সরকারিভাবে ওদের দেশের নরপিশাচদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইছে ততদিন চিকিৎসা করতে আসা বাংলাদেশিদের যাতে কোনো হোটেল বা ঘর ভাড়া না দেওয়া হয়, যাতে কোনো হোটেলে খাওয়ার খেতে না দেওয়া হয় এবং কোনো দোকানে বাংলাদেশিদের কাছে যাতে কোন জিনিসও না বিক্রি করা হয় সেই বিষয়ে হিন্দু মহাসভা প্রচার চালাবে।
হিন্দু মহাসভার রাজ্য কমিটির আইনি উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট দীনেশ পানি বাংলাদেশে আইন ব্যবস্থার অবনতি এবং হিন্দু ও মডারেট মুসলমান আইনজীবীদের উপর আক্রমণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে যেভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, তাতে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা আগামী দিনে আন্তর্জাতিক আদালতে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশের অত্যাচারী রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য হবে। বাংলাদেশ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার বিধানসভায় কেন্দ্র সরকরকে প্রয়োজনে বাংলাদেশে শান্তিসেনা পাঠানোর যে বলিষ্ঠ প্রস্তাব দিয়েছেন তারও ভুয়সী প্রশংসা করেছেন হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী। আজ হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ হাইকমিশনে ডেপুটেশন দেওয়ার প্রতিনিধি মণ্ডলে রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী ছাড়াও আইনি উপদেষ্টা দীনেশ পানি, সমাজসেবী অনামিকা মন্ডল এবং অতনু বসুসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।