আমাদের ভারত, ১১ মে: এমনিতেই নির্বাচনের জন্য অনেক বাস তুলে নেওয়া হয়েছে। তার ওপর পরিবেশ-আইন মেনে বহু বাস বসিয়ে দিতে হচ্ছে। এই অবস্থায় বাস-মালিকদের সঙ্গে সঙ্কটে পড়ছেন যাত্রীরাও। পরিস্থিতি বিচার করে করোনার সময় যে গাড়িগুলো ৩ বছরের মতো ঠিকমত চলতে পারেনি, তাদের বয়সসীমা ২ বছর বাড়িয়ে দিতে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করল বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠন।
২০০৯- এর জুলাই মাসে কলকাতা মেট্রোপলিটন এলাকায় ১৫ বছরের বাণিজ্যিক গাড়ি বাতিলের রায় দেয় উচ্চ আদালত।জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটসের সম্পাদক তপন ব্যানার্জি এই প্রতিবেদককে বলেন, এই মুহূর্তে একটি জিজ্ঞাসা, ১৫ বছর বয়সের ঊর্দ্ধে গাড়ি বাতিল কি কেবল কলকাতায় করা হয়েছে? না ভারতবর্ষের অন্য শহরের জন্যও এই নিয়ম বলবৎ হয়েছে? আমাদের কাছে খবর, এই নিয়ম অনেক রাজ্যে বলবৎ হয়নি।
আমরা দূষণ মুক্ত সমাজ চাই, কিন্তু তার জন্য একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক পরিকল্পনা ও পরিকাঠামো দরকার। তা না করে ভারতের মতো একটি দেশে এই ভাবে কেবলমাত্র ব্যাণিজিক গাড়ি বাতিল করে দূষণমুক্ত সমাজ করা যেতে পারে না। ২০০৭/২০০৮ সালে এই দূষণকে কিভাবে আয়ত্বে আনা যায় তার জন্য আমরা পুলিশ, পরিবেশবিদ ও দূষণ নিয়ে যাঁরা ভাবেন, তাঁদের নিয়ে একাধিক সেমিনার করেছি।
বার বার সেখান থেকে উঠেছে, দূষণ যদি আয়ত্বে আনা যায়, একটি সম্পূর্ণ গাড়ি কেন বাতিল হবে? শহুরে ডিজেল থেকে দূষণ হয়। তার মানে গাড়ির ইঞ্জিন বদল করতে হতে পারে। সুতরাং বিজ্ঞান ভিত্তিক বিবেচনা করলে একটি সম্পূর্ণ গাড়ি বাতিল করতে হয় না।
দূষণ কেবলমাত্র গাড়ি থেকেই হয় না। রাস্তার দু’পাশে দেখা যায প্রচুর দোকান যারা জেনারেটরের মাধ্যমে এবং অনেকে স্টোভ ব্যবহার করেন ব্যবসার জন্য, এখানে কাটা তেল ব্যবহার হয়।
দূষণ এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে না, বাতাসের সাথে ঘুরতে থাকে। সুতরাং এই সার্বিক বিষয়গুলো পুনরায় আদালতের কাছে আবেদন করছি পুনর্বিবেচনা করবার জন্য। দূষণকে আয়ত্বে রাখার জন্য গুণগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। যখন মহামান্য বিচারপতি ভগপতি প্রসাদ ব্যানার্জি পরিবেশ আদালতে ছিলেন তখন থেকেই এই দূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আমরা দেখেছি ২০০৭/৮ সালে যখন ভারতের বিভিন্ন গাড়ি কোম্পানির অবস্থা খুব ভালো না, তাদের গাড়ি বিক্রি হচ্ছিল না, সপ্তাহে মাত্র ৩/৪ দিন কাজ হচ্ছে, এটা নিয়ে তখন তুমুল হইচই হয় দেশে। ঠিক তার পর ২০০৯ সালে রাজ্যে পুরনো গাড়ি বাতিলের আদেশ হয়। বামফ্রন্ট সরকার অসহায় বাস মিনিবাস মালিক, আর কয়েক হাজার শ্রমিকের আয়ের কথা ভাবেনি। ঠিক সেই সময় কিছু নিয়ম মেনে জেএনএনইউআরএম-এর বাতিল বাসগুলো বাসহারা কিছু বাস ও লরি মালিকদের মধ্যে দেওয়া হল। যার পরিণাম কী হলো আজ মানুষ হারেহারে বুঝতে পারছে।
মাঝে মাঝে দেখি বা শুনি যারা এই ১৫ বছরের বাতিল- এর বিষয় নিয়ে বলেন, তাদের বিগত দিনের কোন ইতিহাস জানা আছে বলে মনে হয় না। সেই সময় মিনিবাস
সংগঠনও আমাদের সহযোগিতা করেছিলো। একমাত্র তারা এই আন্দোলনে সামিল হয়েছিলো।”