আমাদের ভারত, ২৮ মে: আগামী ১ জুন কলকাতা সহ রাজ্যের নয়টি কেন্দ্রে শেষ দফার নির্বাচন। তার আগে আজ দিনভর রাজ্যে প্রচারে ঝড় তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অশোকনগর, বারুইপুরে জনসভার পর প্রথমবার কলকাতায় রোড শো করলেন। প্রথমবার কলকাতায় নরেন্দ্র মোদীর রোড শোয়ে মানুষের উপস্থিতি ছিল নজরকাড়া।
মঙ্গলবার সন্ধে সাতটার কিছু পরে প্রথমে বাগবাজারে মায়ের বাড়িতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে শ্যামবাজার থেকে রোড শো শুরু করেন তিনি। শোনা গেছে, আলাদা করে মোদীর জন্য বসার আসন তৈরি রাখা হলেও খালি মাটিতে বসে বেশ কয়েক মিনিট প্রার্থনা সারেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর কিছুটা তাড়াহুড়ো করে অল্প প্রসাদ খান তিনি। বাগবাজার রামকৃষ্ণ মঠের অধ্যক্ষ স্বামী নিত্য মুক্তানন্দ মহারাজের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। অন্যান্য সন্ন্যাসীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে মায়ের বাড়ি ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী।
রোড শো শুরু করার আগে অবশ্য শ্যামবাজারে পাঁচ মাথার মোড়ে নেতাজির মূর্তিতে মাল্য দান করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর হুট খোলা গাড়িতে করে শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর রোড শো। কয়েক কিলোমিটার দূরে সিমলাপালে বিবেকানন্দের পৈত্রিক বাড়ি রাত ৮:১৫ নাগাদ পৌছান মোদী। সেখানে স্বামীজীর মূর্তিতেও শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।
এদিন মূলত কলকাতা উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের সমর্থনে এই রোড শো করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে তাঁর সঙ্গে ছিলেন দমদম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শীলভদ্র দত্ত। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে প্রার্থী তাপস রায়কে জায়গা করে দিতে শুভেন্দু কিছুটা রাস্তা চলার পর সরে যান।
এই রোড শো ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে আজ উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। রাস্তার দু’ধারে ভিড় জমিয়েছিল হাজার হাজার মানুষ। গোটা রাস্তা প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে পুষ্পবৃষ্টি করেন আম জনতা। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বাড়ির বারান্দা, ছাদ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ।
বলা যায় মানুষের ঢলে ভেসে গিয়েছিল উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। গেরুয়া রঙের পোস্টার, ব্যানার , থিম সং, বেলুন, বাহারি শোভাযাত্রায় জমজমাট ছবি তৈরি হয়েছিল আজ উত্তর কলকাতায়।
প্রথমে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ রোড শো করার কথা ছিল মোদীর। কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় কিছুটা কাটছাট হয় রোড শোয়ে। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর রোড শো কিলোমিটার দিয়ে মাপা যায় না। যে পরিমাণ আবেগ দেখা যাবে সেটা আয়তনে মাপা যাবে না। ঠিক সেটাই হয়েছে আজ। পুরো রোড শোকে একটা ফ্রেমে ধরা সম্ভব ছিল না। আর এই সবকিছু থেকে এটুকু স্পষ্ট যে উত্তর কলকাতার লড়াই এবার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সহজ হবে না। ১ তারিখ তাকে যথেষ্ট কঠিন পরীক্ষার সামনে পড়তে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর শো সফল করতে প্রথম থেকে মরিয়া ছিল রাজ্য বিজেপি। কলকাতা লাগোয়া বিভিন্ন জেলা থেকেও কর্মসূচিতে কর্মী সমর্থকদের আসার কথা বলেছিলেন তারা।