Modi, ভারতে ক্ষমতায় থাকা কোনো নেতাকে কি কখনও এতটা আধ্যাত্মিক হতে দেখা গেছে? গেরুয়া বসনে ধ্যানে মগ্ন প্রধানমন্ত্রী, ছবি প্রকাশ্যে

আমাদের ভারত, ৩১ মে: ভারতে ক্ষমতায় থাকা কোনো নেতাকে কি এতটা আধ্যাত্মিক হতে আগে কখনও দেখা গেছে? কেউ কি ক্ষমতায় থাকার সময় এতটা কঠিন ব্রত পালন করেছেন? বিবেকানন্দরকে মোদীর ধ্যানে বসার পর অন্য অনেক প্রশ্নের সঙ্গে এই প্রশ্নগুলোও ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকে তো বলছেন, ভারতে আধ্যাত্মিকতা হয়তো আগে এত শক্তিশালী ছিল না।

আগে থেকেই যেমনটা ঠিক ছিল তেমনটাই হয়েছে। সপ্তম দফার ভোটের প্রচার শেষ করেই কন্যাকুমারীর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেখানে বিবেকানন্দররক মেমোরিয়ালের ধ্যানমণ্ডপমে ধ্যানে বসে পড়েছেন তিনি। যদিও বৃহস্পতিবার তাঁর ধ্যানে মগ্ন হওয়ার কোনও ছবি পাওয়া যায়নি। কিন্তু শুক্রবার সকাল দশটা নাগাদ মোদীর ধ্যানে বসার প্রথম ছবি প্রকাশ্যে আসে।

বিজেপির তরফে ফেসবুক পেজ থেকে মোট চারটি ছবি প্রকাশ করা হয়। একটি ছবিতে দেখা যায় গেরুয়া বসন পরে হাত জোর করে ধ্যানে বসে রয়েছেন মোদী। এই ছবিটি ছাড়াও আরো তিনটি ছবি প্রকাশ করা হয় বিজেপির তরফে।

সূত্রের খবর, সন্ধে ৬টা ৪৫ মিনিটে ধ্যানমণ্ডপমে ধ্যানে বসেছেন মোদী। এর আগে থেকেই মোদীর ধ্যানে বসার ইস্যু নিয়ে দেশের রাজনীতিতে নানা আলোচনা, সমালোচনা শুরু হয়েছে। মোদীর এই ধ্যান নিয়ে সরব হয়েছিল সিপিএম, কংগ্রেস সহ বিরোধীরা। তারা প্রধানমন্ত্রীর ধ্যানমগ্ন হওয়ার ছবি যাতে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত না হয় তার জন্য নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাদের বক্তব্য ছিল, মোদীর ধ্যানমগ্ন হবার ছবি প্রচার মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হলে সপ্তম দফার ভোটে নির্দিষ্ট একটি দলকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেবে। কমিশনের আদর্শ আচরণবিধি যাতে ভঙ্গ না হয় তাই এই সম্প্রচার বন্ধ রাখার আবেদন জানানো হয়। ঠিক এই সাথে আলোচনায় উঠে এসেছে, এর আগে ভারতে ক্ষমতায় থাকা নেতারা এতটা আধ্যাত্মিক কখনও হননি। সত্যি কি ভারতে ক্ষমতার শীর্ষে থাকা কাউকে এভাবে আধ্যাত্মিক হতে দেখেছে দেশবাসী। অথচ ভারতের আধ্যাত্মিক ভাবনার একটা ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস আছে। তাই অনেকেই দাবি করেছেন, মোদীর এই পদক্ষেপ ভারতের সেই ঐতিহ্যকেও তুলে ধরার চেষ্টা।

বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ হেলিকপ্টারে কন্যাকুমারীতে নামেন মোদী। এরপর তাঁর কনভয় ভগবতী আম্মানের মন্দিরে পৌঁছায়। সেই সময় তার পরনে ছিল সাদা ধুতি, সাদা চাদর। দক্ষিণ ভারতীয় কায়দায় লুঙ্গির মতো করে সাদা ধুতি পড়েছিলেন মোদী। এরপর মন্দিরে বিগ্রহ প্রদক্ষিণ করেন তিনি। প্রদীপের তাপ নেন। পুরোহিতরা তাঁর হাতে ভগবতী আম্মানের বিগ্রহের একটি ছবি তুলে দেন। এরপর মোদী চলে যান কন্যাকুমারীরক মেমোরিয়ালে। সেই সময় তাঁর পরনে সাদা শার্ট, সাদা ধুতি, গলায় উত্তরীয় ছিল। রকমেমোরিয়ালে গিয়ে শ্রীরামকৃষ্ণ, মাসারদা দেবী এবং স্বামী বিবেকানন্দের ছবিতে ও মূর্তিতে প্রণাম জানান মোদী, সেই ছবিও দেখা গেছে। কিন্তু এরপর তাঁর আর কোনো ছবি দেখা যায়নি। শুক্রবার সকালে তাঁর ধ্যানমগ্ন ছবি প্রকাশ করে বিজেপি।

৩০ মে সন্ধে থেকে ১ জুন সন্ধে পর্যন্ত দু’দিন বিবেকানন্দ রকমেমোরিয়ালে ধ্যান করবেন মোদী। খাবেন আঙুরের জুস আর ডাবের জল।

মোদী ধ্যানে বসেছেন, এই কারণে সৈকত জুড়ে জারি করা হয়েছে নিরাপত্তা। শনিবার পর্যন্ত পর্যটকরাও সেখানে যেতে পারবেন না। সাগরে কোন বেসরকারি নৌকা চলবে না। কন্যাকুমারীতে ২০০০ পুলিশ কর্মী রাখা হয়েছে। এর আগে দু’বার লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের শেষেও আধ্যাত্মিক সফরে বেরিয়েচ্ছিলেন মোদী। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রচার শেষে গিয়েছিলেন কেদারনাথ। ২০১৪ সালে গিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের শিবাজীর প্রতাপগড় দুর্গে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *