অশোক সেনগুপ্ত, আমাদের ভারত, ৩ অক্টোবর: “আমরা এই বছরের দুর্গা পুজোর থিম করেছি ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে’। রাজনৈতিক শক্তি সরাসরি হুমকি দিয়ে এই পুজো বন্ধ করতে চাইছে। অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা গভীর যন্ত্রণার সাথে, সমস্ত সনাতনীদের কাছে এই তথ্যটি জানাতে চাইছে।”
সোমবার দুপুরে এই আবেদন করেন চন্দ্রচূড় গোস্বামী। ইএম বাইপাসে রুবি পার্কে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার পুজোয় এবার মহাত্মা গান্ধীকে অসুর সাজানো হয়েছিল। অসুরের চোখে বাপুজির গোল চশমাটিও ছিল। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয় প্রবল বিতর্ক। এর পর বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া হওয়ায় রবিবার রাত থেকেই কয়েক দফায় বদলের পর অসুরের মুখটি অসুরের মতই করে দেওয়া হয়।
প্রবল চাপ এবং হুমকির মুখেও ভাঙতে রাজি নন চন্দ্রচূড়। পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে এমএসসি-তে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। এই প্রতিবেদককে দাখিল করা জীবনপঞ্জীতে দেখা যাচ্ছে সর্বভারতীয় ‘নেট’-এ ১২-তম স্থান পেয়েছিলেন। এখন পিএইচডি করছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘লেকচারার’ হিসাবে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই সঙ্গে বেঙ্গল ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের রেজিস্টার্ড খেলোয়াড়।
পাশাপাশি, গানেও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে চন্দ্রচূড়ের। ভোকাল মিউজিকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম। পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর শিষ্য। এ সবের মধ্যেই দীর্ঘ দিন আগে থেকে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল চন্দ্রচূড়ের। এখন তিনি সামলে চলেছেন সংগঠনের একাধিক দায়িত্ব।
গেরুয়া শিবিরের ‘স্বস্তিকা ডিজিটাল টিভি’-র প্রধান সম্পাদক, ওয়েব জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি পদেও রয়েছেন তিনি। অন্যান্য পরিচয়ের মধ্যে আছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের কর্মচারী সঙ্ঘের সভাপতি, কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রক অনুমোদিত সনাতন ভারত সোস্যাল ক্লাবের সভাপতি, আন্তর্জাতিক ক্যারাটে মোর্চা ’দি ওয়্যারিয়র্স’-এর সভাপতি, নেহরু যুব কেন্দ্রর ‘রিসোর্স পার্সন’।
কৃতকর্মের সমর্থনে চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন, “অসুরের সাথে গান্ধীর চেহারার কিছু মিল নিতান্তই কাকতালীয়। কিন্ত আমরা স্পষ্ট ভাষায় জানাচ্ছি, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে নিয়ে বারবার নোংরা রাজনীতি করছে ওয়াশিং মেশিন পার্টি। ওরা নেতাজীর সাথেও আছে, আবার গান্ধীর আদর্শে প্রধান মন্ত্রী তার দেশ চালাচ্ছে বলে বয়ান দিচ্ছেন। বিজেপি বলে ওরা হিন্দুত্ববাদী পার্টি, কিন্তু ওদের সংবিধান বলছে ওরা গান্ধীবাদী সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী। গান্ধীর জন্যই আমরা দেশ নায়ক সুভাষচন্দ্র বসুকে এবং বিপ্লবী ভগৎ সিং’কে হারিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর স্বচ্ছ ভারত মিশনেও আমরা গান্ধীর চশমা নয় নেতাজীর চশমা বা টুপিকে দেখতে চাই। আমাদের দাবি, আপনারা প্রধানমন্ত্রীকে পৌঁছে দিন।”