পুরুলিয়ার আনন্দ মঠ হোমে বিজেপি নেত্রীকে ঢুকতে পুলিশি বাধায় উত্তেজনা 

সাথী দাস, পুরুলিয়া, ৩ জানুয়ারি: পুরুলিয়ার আনন্দমঠ জুভেনাইল সরকারি হোমে ঢুকতে গিয়ে বিজেপি নেত্রী পুলিশি বাধার মুখে পড়ায় উত্তেজনা ছড়াল এলাকায়। আজ লকেট চ্যাটার্জি, সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো সহ অন্যান্য বিজেপি নেতাকর্মীরা পুরুলিয়া শহরের কাছে শিমুলিয়ায় সরকারি আনন্দ মঠ হোমে ঢোকার চেষ্টা করেন। সেই সময় পুলিশ ব্যারিকেড করে তাদের বাধা দেয়। বাধা পেয়ে ঘটনাস্থলেই অবস্থান বিক্ষোভ করেন বিজেপি নেতা কর্মীরা। 

প্রসঙ্গত, পুরুলিয়ার আনন্দ মঠ সরকারি হোমে কিশোরী, তরুণী আবাসিকদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগে তোলপাড় হয় পুরুলিয়া। এই নিয়ে এমনিতেই অস্বস্তিতে পড়ে যায় প্রশাসন। প্রশাসনের গাফিলতিতে এই ঘটনা ঘটেছে এমনই অভিযোগে সরব হয় বিজেপি। আজ নির্যাতিতা এবং অন্যান্য আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলতে বিজেপি নেত্রী লকেট চ্যাটার্জির নেতৃত্বে হোমের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে বিজেপি নেতা কর্মীরা। তখনই বিশাল পুলিশ বাহিনী তাদের বাধা দেয়।

তার আগে দলীয় ‘আর নয় অসুরক্ষা’ কর্মসূচিতে অংশ নেন। পুরুলিয়া স্টেশনের কাছ থেকে মিছিল শুরু হয়ে শেষ হয় স্থানীয় ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে। সেখানে পথ সভায় রাজ্য সরকার ও তৃণমূল সুপ্রিমোকে নিশানা করে তোপ দাগেন তিনি। তিনি বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জি শিল্পের নাম করে তুমি দুটি শিল্প তৈরী করেছ। চপ শিল্প আর বোমা শিল্প। পাড়ায় পাড়ায় বোমা তৈরির কারখানা তৈরী করেছ। চারিদিকে শুধু জঙ্গিরা ধরা পড়ছে। পুরো পশ্চিমবঙ্গকে বারুদের স্তুপের উপর বসিয়ে রেখেছ।’ পুরুলিয়ায় বিজেপির আয়োজিত পথসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই ভাষাতেই মন্তব্য করেন লকেট চ্যাটার্জি।

এদিন বক্তব্যের শুরুতেই আনন্দ মঠ জুভেনাইল হোমে নাবালিকাদের উপর হওয়া শারীরিক নির্যাতনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকারি হোমে সরকারি মদত ছাড়া কি করে নাবালিকাদের উপর শারীরিক নির্যাতন হয়? সরকার এটাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে ওই সরকারি হোমে এধরনের ঘটনা ঘটছে। তাই যতদিন না পর্যন্ত দোষীরা শাস্তি পাচ্ছে বিজেপি লড়াই চালিয়ে যাবে।”

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নাম না করে তিনি বলেন, “পিসি শুধু শাড়িকে চেনেন আর নিজের বউয়ের গয়নাকে চেনেন। এই দুজন মহিলা ছাড়া এঁরা বাংলার সব মহিলাকে অপমান করেন। এই জিনিস আমরা হতে দেব না। পিসি পরে হওয়াই চটি আর মমতা ব্যানার্জি শিল্পের নাম করে আপনি দুটি শিল্প তৈরী করেছেন। চপ শিল্প আর বোমা শিল্প। পাড়ায় পাড়ায় বোমা তৈরির কারখানা তৈরী করেছেন। চারিদিকে শুধু জঙ্গিরা ধরা পড়ছে। পুরো পশ্চিমবঙ্গকে বারুদের স্তুপের উপর বসিয়ে রেখেছে যাতে আগামী দিনে ক্ষমতায় আসতে পারে।

দুয়ারে সরকার প্রসঙ্গে তিনি জন সাধারণের উদ্দেশ্যে বলেন,”দুয়ারে সরকারে তো চোর ডাকাতরা আসবে।  এতদিন রাস্তায় ছিল। এখন মানুষের ঘরের মধ্যে ঢুকে চাল, ঘটি, বাটি যা ছিল সেগুলোও নিয়ে চলে যাবে। আগামীদিনে দুয়ারে সরকার এলে আচ্ছা করে দেবেন। আমরা একসাথে হয়ে আগামীদিনে লড়ব।”

এদিনের লকেট চ্যাটার্জি বলেন, “বাংলায় যদি কোনও মহিলার গায়ে কোনওরকমে হাত পড়ে তাহলে আমরা সেই হাত কেটে দেব। আগামীদিনে একুশে সরকার আসবে। আর ওইদিকে তৃণমূলের জোড়া ফুলে দুজনই মালিক থাকবেন পিসি আর ভাইপো।” এখন কয়লা চোর, গরু চোরদের সিবিআই ধরছে। এই সিবিআই কালীঘাট অবধি যাবে এবং এই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ডায়মন্ড হারবারের এমপি তিনি এই কয়লা পাচারের সঙ্গে যুক্ত আছেন এটা সবাই জানেন।”

এদিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পুরুলিয়া লকেসভা কেন্দ্রের সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, জেলা বিজেপি সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তি, জেলা মহিলা মোর্চা সভানেত্রী কাবেরী চ্যাটার্জি সহ অন্যান্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *