আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, সিউড়ি, ১৫ মার্চ: দোল পূর্ণিমায় বক্সে ঠাকুরের গান বাজানোকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল বীরভূমের সাঁইথিয়া পুরসভার দুটি ওয়ার্ড। ঘটনা যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেই কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট। ১৭ মার্চ সকাল পর্যন্ত সাঁইথিয়া পুরসভা সহ পাঁচটি পঞ্চায়েত এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার বিকেলে। দোল পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে বীরভূমের সাঁইথিয়া পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বড় কালীতলা পাড়া এলাকায় বক্স বাজছিল। বড় কালীতলা পাড়ার দাবি, দোলের জন্য ঠাকুরের গান বাজছিল। পাশেই ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের লালদিঘি পাড়া। তারা ঠাকুরের গান বন্ধ করতে বলে। কিন্তু তাতে কর্ণপাত না করাতেই পুলিশের সামনেই শুরু হয় হাতাহাতি। অভিযোগ, লালদিঘি পাড়ার লোকজন বাঁশ, লাঠি নিয়ে বড় কালীতলা পাড়ার উপর আক্রমণ করে। ছয় জনের মাথা ফাটিয়ে দেয়। তাদের মধ্যে চারজন মহিলা। তাদের সাঁইথিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন্নে আনে। পুলিশ এখনও পর্যন্ত উভয় পক্ষের ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে। উত্তেজনা থাকায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনা যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেই জন্য জেলা প্রশাসনের চিঠি পেয়ে সাঁইথিয়া ব্লকের হাতোড়া, মাঠপলসা, হারিসরা, দেরিয়াপুর এবং ফুলুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১৭ জানুয়ারি সকাল পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের নির্দেশ দেন মুখ্য সচিব।
অন্যদিকে কীর্ণাহার থানার আনাইপুর গ্রামে সন্ধ্যায় জয় শ্রীরাম ধ্বনি দেওয়ায় তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে গ্রামবাসীদের। অভিযোগ এরপরেই পার্শ্ববর্তী কালীনগর গ্রামের অন্য সম্প্রদায়ের লোকজন আনাইপুর গ্রামে চড়াও হয়। গ্রামে আক্রমণের খবর পেয়ে পুরুষ ও মহিলারা হাতে লাঠি সোঁটা নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে। এরপরেই পিছু হঠতে বাধ্য হয় কালীনগর গ্রামের লোকজন। রাতে গ্রামে কীর্ণাহার, নানুর ও লাভপুর থানার পুলিশ গেলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রামবাসীরা।
তাদের দাবি, শুক্রবার সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী দেবগ্রামে দোল উপলক্ষ্যে পঙক্তিভোজের আয়োজন ছিল। ওই গ্রামে যাওয়ার পথে দু-একজন শুধুমাত্র জয় শ্রীরাম ধ্বনি দেওয়ায় তৃণমূলের একাংশ অন্য সম্প্রদায়ের লোকজনকে গ্রামে ঢুকিয়ে অশান্তির সৃষ্টি করে। শনিবার সকালে আনাইপুর গ্রামের লোকজন কীর্ণাহার থানায় জমায়েত হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে এখনও পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।