”সুবোধ বালক চাই না, হিন্দুধর্মের জন্য রকবাজদের চাই,” পিকনিকের মোড়কে চলছে হিন্দুত্বের প্রচার

আমাদের ভারত, কলকাতা, ১০ ফেব্রুয়ারি: সুবোধ বালক নয়, আমরা চাই রকবাজদের, যাদের দম আছে, যারা নিজেদের ধর্ম রক্ষা করতে পারবে। এভাবেই প্রতিটি পিকনিকে হিন্দুত্ব এবং হিন্দু ধর্ম রক্ষার জন্য প্রচার চালাচ্ছে হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। গোটা রাজ্য জুড়ে এই শীতের মরশুমে বিভিন্ন জেলায় চলছে হিন্দু জাগরণ মঞ্চের বনভোজন। আর সেই বনভোজনের মোড়কে চলছে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি হিন্দু ধর্ম রক্ষার জন্য যুবকদের এগিয়ে আসার জন্য প্রচার।

একদিকে যখন সিএএ–র বিরুদ্ধে যখন বিরোধীরা প্রচার করছে, তখন এর সমর্থনে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। পথসভার পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে তারা বনভোজন করছে। প্রতিটি বনভোজনে বিশেষভাবে সিএএ–র সমর্থনে জোরদার প্রচার এর পাশাপাশি কর্মীদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। সেখানে ভারতের সাংস্কৃতিক ঐক্য এবং আধ্যাত্মিকতার কথা প্রচার করা হচ্ছে। তুলে ধরা হচ্ছে দেশভাগের কথা। তাদের বক্তব্য, দেশ ভাগ করে কোটি কোটি হিন্দুকে বিপদের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। আজ সিএ এর মাধ্যমে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার চেষ্টা চলছে, অথচ কিছু দল তার বিরোধিতা করে যাচ্ছে। হিন্দুদের পক্ষে কথা বললেই সাম্প্রদায়িক তকমা জুড়ে দেওয়া হচ্ছে সবকিছু। সব ধর্মের কথা বলা যায় কিন্তু হিন্দুদের পক্ষে কথা হয় না। হিন্দুদের সেকুলার বানানো হয়েছে। তাই তাদের পুজোতেও আজ বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

হিন্দু জাগরণ মঞ্চের এরকমই একটি বনভোজনে মঞ্চের কার্যকরী সভাপতি স্বরূপ দত্ত বলেন, মুসলমানরা এই দেশ ভাগের পক্ষে ভোট দিয়ে সমর্থন জানিয়েছিল। আজ সেই কারণে পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে এখনো নির্যাতিত হিন্দুরা ভারতে আসেন। তারা দু’মুঠো ভাতের জন্য আসছেন না, তারা নিজেদের ধর্ম সংস্কৃতিকে রক্ষা করার জন্য ভারতে আসছেন। আর হিন্দু যারা ছাড়া যারা আসছেন তাদের তিনি তাড়কা রাক্ষসীর এবং পুতনা রাক্ষসী সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি বলেন এই তারকা রাক্ষসীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলেন ভগবান শ্রীরামচন্দ্র আর পুতনাকে বোধ করেছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তাই আজ হিন্দু ধর্ম রক্ষার জন্য যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, আমরা সেই সব যুবকদের চাই, যাদের দম আছে, যারা নিজেদের পূজাপার্বণ, ধর্ম রক্ষা করতে পারবে। আমরা সুবোধ বালক চাই না। আমরা চাই রগবাজদের।

হিন্দু জাগরণ মঞ্চের প্রমূখ পারিজাত চক্রবর্তী বলেন, যারা তিন তালাক বন্ধ, ৩৭০ ধারা বিলোপ এবং রাম মন্দির নির্মাণের বিষয়টি সহ্য করতে পারেনি, তারাই সিএএ–র বিরোধিতা করে সেই রাগ মেটাচ্ছে। তারা সংবিধান এবং জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে দেশের বিরোধিতা করছে।

হিন্দু জাগরণ মঞ্চের নেতা মৃত্যুঞ্জয় পাল বলেন, আমাদের পরিবারের সদস্যদেরও ধর্ম সম্পর্কে সুশিক্ষিত করতে এবং সিএএ সম্পর্কে জানানোর জন্য এই পিকনিক খুবই কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে।

সংগঠনের সম্পাদক উত্তম অধিকারী বলেন, সিএএ–র সমর্থনে দক্ষিণবঙ্গে ৩০টির বেশী জায়গায় বনভোজন হয়েছে। প্রায় ১০ হাজার কার্যকর্তা এবং তাদের পরিবার-পরিজন সেইসব বনভোজনে অংশগ্রহণ করেছেন। মূলত যেসব জায়গাতে সিএএর সমর্থনে মিছিল ও পথসভা করতে দেওয়া হয়নি, সেখানেই তারা সিএএর সমর্থনে প্রচারের জন্য এই কৌশল নিয়েছেন। এই বনভোজনে অংশগ্রহণকারীরা এরপর বাড়ি বাড়ি গিয়ে সিএএর সমর্থনে প্রচার চালাবেন। আগামী কয়েকদিনে আরো কয়েকটি জায়গায় তারা এরকম বনভোজন করবেন। পিকনিক ছাড়াও হিন্দু জাগরণ মঞ্চ শুধু দক্ষিণবঙ্গেই সিএএর সমর্থনে কুড়িটি জনসভা করেছে বলে উত্তমবাবু জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *