আমাদের ভারত, সিউড়ি, ২৪ মার্চ: একদিকে মারণরোগ করোনা ভাইরাস অন্যদিকে পুলিশের নির্বিচারে মারধরের আতঙ্কে নিজেদের ঘরবন্দি করে রেখেছেন বীরভূমের মানুষ। চিকিৎসার প্রয়োজনেও কেউ বাড়ির বাইরে পা রাখতে সাহস পাচ্ছেন না। সবজি বাজারে গিয়েও পুলিশের রক্তচক্ষুর শিকার হয়েছেন কেউ কেউ। এদিকে মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে শুরু হয়েছে কালোবাজারি। যদিও পুলিশও সেখানে হানা দিচ্ছে। কিন্তু পুলিশ চলে যেতেই চড়ছে আলু-পটলের দাম।
সোমবার বিকেল থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে লকডাউন। ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও মানুষকে সচেতন করা যায়নি। বিশেষ করে যুবকদের। কেউ কেউ ক্লাবে পিকনিক করেছে। কেউ কেউ বসিয়েছে তাস, ক্যারাম বোর্ডের আসর। অহেতুক কিছু যুবক মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়ে আর পাঁচটা বন্ধের মতো কেমন প্রভাব পড়ল তা দেখতে বেরিয়েছেন। এই মারণ রোগের প্রভাব যে কতটা ভয়ংকর তা এখনও আঁচ করতে পারেননি জেলার যুব সম্প্রদায়ার। অতচ তাদের উপরেই দেশের ভার। এই যুবকদের ইতিউতি ঘুরে বেড়ানোর কারণে পুলিশের লাঠির সম্মুখীন হতে হচ্ছে বিশেষ প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষদের। সোমবার রাত থেকেই পুলিশ তৎপরতার সঙ্গে লকডাউন সর্বাত্মক করতে এক প্রকার ঝুঁকি নিয়েই রাস্তায় নেমেছে। দোকানপাট বন্ধ করতে বাধ্য করেছে। ঠেকে বসে থাকতে দেখলেই লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে গিয়েছে। কখনও কখনও কয়েক ঘা কসিয়েছেও। সিউড়ি থেকে রামপুরহাট, নলহাটি, মুরারই সর্বত্র একই ছবি।
মঙ্গলবার দুপুরে স্ত্রীকে নিয়ে রামপুরহাট ভাঁড়শালা মোড়ে চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়েছিলেন তারাপীঠ থানার ফুলিডাঙ্গা গ্রামের আজিজুল শেখ। পুলিশের মারধরের আতঙ্কে তিনি চিকিৎসা না করিয়েই বাড়ি ফিরেছেন। তিনি বলেন, “বেশ কয়েকজন মানুষ হাড়ের ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন। পুলিশ কারও কোনও কথা না শুনে মারধর শুরু করে। ভয়ে আমি ডাক্তার না দেখিয়ে বাড়ি ফিরেছি”। এরকম ঘটনার সাক্ষী রয়েছেন অনেকেই।
এনিয়ে হাঁসন কেন্দ্রের বিধায়ক মিল্টন রশিদ বলেন, “পুলিশ তাদের কাজ করছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে কিসের জন্য দু-একজন বাড়ির বাইরে বেরিয়েছেন তা জানার পর পদক্ষেপ নিলে ভালো হয়”।
জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, “আমরা একটা টাক্সফোর্স গঠন করেছি। তারা সমস্ত বিষয়ের উপর নজর রাখবে। সেই সঙ্গে পণ্যবাহী ভিন রাজ্যের গাড়ি আটকে দেবে”।