স্বরূপ দত্ত, উত্তর দিনাজপুর, ২৮ ডিসেম্বর: একটা সেতু হলে ত্রিশ কিলোমিটার রাস্তা কমে গিয়ে দাঁড়াবে মাত্র আট কিলোমিটারে, উপকৃত হবে ৩০০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোট আসে ভোট যায় নদীর উপর সেতু তৈরি নিয়ে শুধুই হয় রাজনীতি, তাদের আর দুর্ভোগ শেষ হয় না।
রায়গঞ্জ ব্লকের ৫ নম্বর শেরপুর গ্রামপঞ্চায়েতের খলসিঘাটের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে কুলিক নদী। এই কুলিক নদীর দুইপাড়ে রয়েছে শেরপুর, গোবিন্দপুর, লাইনপাড়া, ডাঙ্গিপাড়া, বরমপুর, খোকসা, গামাডাঙ্গি, বিন্দোল, খলসি, মেহেন্দিগ্রাম সহ প্রায় তিনশটি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ কুলিক নদী পারাপার করে। জেলা সদর রায়গঞ্জ শহর আসা থেকে শুরু করে বিডিও অফিস, রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ বিভিন্ন কাজে শহরে আসতে গেলে এই নদী পার হয়ে আসাযাওয়া করতে হয়। বর্ষায় দুকূল ছেপে যাওয়া নদী পার হতে একমাত্র ভরসা নৌকা আর শুকনোর দিনে বাঁশের সাঁকো। জল কমতেই খলসিঘাটের বাসিন্দারা কুলিক নদীর উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করার প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন।
এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে জেলা সদর রায়গঞ্জ শহরে যেতে সেতু না থাকায় বর্ষাকালে ঘুরপথে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয় তাঁদের। এতে একদিকে যেমন সময় বেশি লাগে পাশাপাশি অর্থও খরচ হয় বেশি। ঘটে নৌকাডুবির মতো দুর্ঘটনাও। চরম সমস্যায় ভুগছেন এলাকার কৃষক থেকে গ্রামগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ। বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, সব রাজনৈতিক দলই এই খলসিঘাট সেতু নিয়ে রাজনীতি করে চলেছে। প্রতিবার পঞ্চায়েত থেকে বিধানসভা কিংবা লোকসভা ভোট আসে, ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায় ভোট পার হলেই আর সেতুর কথা কারও মনে থাকে না। বছরের পর বছর চরম বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছেন তাঁরা।
এলাকায় সেতু নির্মানের বিষয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলাপরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পূর্নেন্দু দে জানিয়েছেন, খলসিঘাট এলাকায় কুলিক নদীর উপর সেতু নির্মানের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছিল। সেতু নির্মানের জন্য সয়েল টেস্ট করাও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কলকাতায় মাঝেরহাট সেতু ভেঙ্গে যাওয়ার পর রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৫০ মিটারের উপর সেতু নির্মান রাজ্য সরকার সরাসরি করবে। যারফলে জেলাপরিষদ এই সেতু নির্মানের পরিকল্পনা নিয়েও তা করতে পারেনি। তবে জেলাপরিষদ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।