আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ২৪ নভেম্বর: জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান মানেই হাতি বা জিপ সাফারিকেই সবচেয়ে আকর্ষন মনে করেন সিংহভাগ পর্যটক। এছাড়া বনবিভগের নিয়ন্ত্রণে থাকা বনবাংলো, কটেজগুলিতে রাত কাটানোর দিকেও নজর থাকে ভ্রমণ পিপাসুদের। তবে এই বুকিং নিয়ে পর্যটকদের একাংশের অভিযোগ প্রায় দিনই সামনে চলে আসত। তবে এবার সেই জনপ্রিয় সাফারি বা বনবাংলো বুকিং আরও অনেকটাই সহজ হল। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের নিজস্ব ওয়েব পেজ থেকেই এবার সরাসরি ঘরে বসেই অনলাইন বুকিং করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, কোভিড পরিস্থিতিতে এমনিতেই পর্যটনের উপর আঘাত এসেছিল। তবে মাস দেড়েক আগেই জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ www.jaldaparanationalpark.org নামে একটি নিজস্ব ওয়েব পেজ শুরু করেছেন। এই অল্প সময়ের মধ্যেই নতুন ওয়েব পেজটি যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছে। মাত্র দেড় মাসেই প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ ওয়েব পেজটি দেখেছেন। যার মধ্যে অনেকেই জিপ সাফারি বুকিং সহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছেন। পর্যটকদের অনলাইন বুকিং সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে নির্দিষ্ট ফোন নম্বর রাখা হয়েছে। নতুন এই ওয়েব পেজটিকে যতটা সম্ভব তথ্য সমৃদ্ধ করার কাজও চলছে।
শুধু বেড়ানোই নয় নিজের বেড়াবার অভিজ্ঞতাও পেজটিতে লিখে জানাতে পারবেন। পাশাপাশি নিজের জলদাপাড়া বেড়ানোর সময়গুলিতে তোলা ছবিও আপলোড করতে পারবেন যে কেউ। যদি বনদপ্তরের সেই ছবি পছন্দ হয় তাহলে সপ্তাহের সেরা ছবি হিসেবে তেমনই একটি ছবি স্থান পাবে পেজটিতে। উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন আগে থেকেই পেজের কাজ শুরু হয়। উদ্যোগ নিয়েছিলেন স্বয়ং জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও কুমার বিমল। তিনি জানান, “ওয়েব পেজটিকে আরও তথ্য নির্ভর করে তুলতে আমরা এখনো কাজ করছি। তবে ইতিমধ্যেই মানুষের যে রকম সাড়া পেয়েছি তাতে আমরা অভিভূত। গোটা বিশ্বেই জলদাপাড়ার পরিচিতি রয়েছে। অনলাইন বুকিং পছন্দ করেন জাতীয় উদ্যান থেকে দূরে থাকা মানুষেরা। যখন অনলাইন বুকিং ছিল না তখন কার সাফারি নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার কথা উঠে এসেছিল। এখন পর্যটকদের কাছে জলদাপাড়া অনেকটাই কাছের হয়ে গেল।”
জলদাপাড়া সম্পর্কে জানা অজানা অনেক তথ্যই পেজটিতে আগামীতে উঠে আসবে। পেজের লিংক থেকে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু ওয়েবপেজে চলে যাওয়া যাবে।বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানান, অনলাইন বুকিং না থাকায় দালালচক্র সক্রিয় ছিল। তবে এখন আর সেই সমস্যা নেই।পাশাপাশি নিজেদের সমস্যার কথা, ভালমন্দ সবকিছু মানুষ পেজটিতে জানাতে পারবেন, যা সরাসরি বনকর্তাদের নজরে থাকবে। উল্লেখ্য, একশৃঙ্গ গন্ডারের জন্য পৃথিবীজুড়ে খ্যাতি রয়েছে জলদাপাড়ার। আপাতত হাতি সাফারি বন্ধ।স্বাভাবিকভাবেই জিপ সাফারি ছাড়া গন্ডার দর্শন কার্যত অসম্ভব। একটি সময়ে মাত্র ১০টি গন্ডার ছিল জলদাপাড়ায়। গত প্রায় ২৫ বছর একটানা গণ্ডার সংরক্ষণ করে বর্তমানে একশৃঙ্গদের সংখ্যা ২৫০ ছুঁই ছুঁই–যা একটা নজির। আগামীতে জাতীয় উদ্যানকে সাজানোর আর বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।