সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১২ ডিসেম্বর: ক্রমেই কলকাতা যেন আতঙ্কনগরী হয়ে উঠছে প্রবীণ-প্রবীণাদের কাছে। নেতাজিনগরে বৃদ্ধ দম্পতি খুনের পর এবার গরচায় খুন হতে হল এক প্রবীণাকে। গড়িয়াহাটের গরচা রোডের একটি বাড়িতে উদ্ধার হল উর্মিলা ঝুন্ড নামে ষাটোর্ধ্ব ওই বৃদ্ধার দেহ। শুধু গলা কাটাই নয়, পেটেও ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
ঘটনাস্থলে আসেন যুগ্ম কমিশনার (অপরাধদমন) মুরলীধর শর্মা। নমুনা সংগ্রহ করে ফরেন্সিক দলও। বুধবার রাতেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অনুমান গোয়েন্দাদের। কার্যত ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারংবার আঘাতে বৃদ্ধার ধড় মাথা আলাদা করে দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ছোটছেলের সঙ্গে ওই বাড়িতেই থাকতেন বৃদ্ধা। পাশেই থাকেন বৃদ্ধার বড়ছেলের স্ত্রী। আদতে পাঞ্জাবের বাসিন্দা হওয়ায় মাঝে মধ্যেই সেখানে গিয়ে থাকতেন ওই বৃদ্ধা-সহ পরিবারের অন্যান্যরা। মাস দুয়েক আগে পাঞ্জাব থেকে ফেরেন উর্মিলাদেবী। এরপর কয়েকদিন আগে পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শিলিগুড়ি যান বৃদ্ধার ছোট ছেলে। ফলে বুধবার রাতে বাড়িতে একাই ছিলেন তিনি। কাল রাতে একজনের হাতে বৃদ্ধার রাতের খাবার পাঠান তাঁর বড়বউমা। বৃহস্পতিবার সকালে ঘর থেকে উদ্ধার হল তাঁর গলা কাটা, ক্ষতবিক্ষত দেহ।
আজ সকালে ঊর্মিলার বাড়িতে যান তাঁর পরিচারিকা। বার বার ডেকেও সাড়া পাননি তিনি। তাঁর ডাকে জড়ো হন প্রতিবেশীরা। জানলার পর্দা সরিয়ে তাঁরা দেখতে পান, ঊর্মিলার ঘর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। খাটে পড়ে রয়েছে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে গড়িয়াহাট থানার পুলিশ।
তবে কী কারণে এই খুন তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে পুলিশের। কারণ বৃদ্ধার ঘরের আলমারি, দুটো ঘরের জিনিসপত্র লন্ডভন্ড করা হলেও সেখান থেকে কিছুই খোয়া যায়নি। অথচ যেভাবে নৃশংস কায়দায় বৃদ্ধাকে খুন করা হয়েছে তাতে কোনো উদ্দেশ্য ছাড়া এই খুন, তা মানতে নারাজ গোয়েন্দারা। তাহলে এই খুনের পেছনে রহস্য কী? আপাতত সেই প্রশ্নের উত্তরেই তদন্তে গোয়েন্দারা।