পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ জানুয়ারি: ‘চিকিৎসকদের গাফিলতি নয়, প্রসূতি মৃত্যুর জন্য নির্দিষ্ট কোম্পানির স্যালাইন দায়ী’, স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা। শুক্রবার বিকেল থেকে ‘কর্মবিরতি’র সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠক করেন তাঁরা। বৈঠক শেষে জানানো হয়, মানবিকতার কারণে পূর্ণ কর্মবিরতির পথে হাঁটছেন না তাঁরা। তবে আগামী দিনে পূর্ণ কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
চিকিৎসকরা এ দিন জানান, নিহত মামণি রুইদাসের অস্ত্রোপচারের সময় আরএমও (সৌমেন দাস) ডিউটিতে ছিলেন। তাঁর অধীনেই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। এই টিম আগেও একাধিক অস্ত্রোপচার করেছে। কোনও ক্ষেত্রে সমস্যা হয়নি। তাঁদের দাবি, ওই দিন চার জনের (মামণি রুইদাস, মাম্পি সিং, নাসরিন খাতুন, মীনায়ারা বিবি) অস্ত্রোপচারের পরেই তাদের শ্বাসকষ্ট হয়।
জুনিয়র ডাক্তারদের এক প্রতিনিধি বলেন, ‘এরপর আমরা পঞ্চম প্রসূতিকে (রেখা সাউ) বেডে তোলার পর একটি স্যালাইন দেওয়ার পর দেখি তারও শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তখনই আমরা অনেকটা নিশ্চিত হই। সে জন্যই মুচলেকা লেখানো হয় এবং ওই পরিবারকে বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে আনতে বলা হয়। ষষ্ঠ ও সপ্তম প্রসূতিকে একটাও ওই স্যালাইন দেওয়া হয়নি। সে জন্যই তারা সুস্থ হয়ে ইতিমধ্যেই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। পঞ্চম প্রসূতিকে মাত্র একটা স্যালাইন দেওয়ার কারণে তিনিও অপেক্ষাকৃত কম অসুস্থ হন।’
মেদিনীপুর মেডিক্যালের ১২ জন চিকিৎসকের (ছ’জন জুনিয়র ডাক্তার) সাসপেনশন নিয়েও এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে প্রবল আপত্তি তোলা হয়েছে। জুনিয়র ডাক্তাররা বলেন, ‘তদন্ত কমিটির (স্বাস্থ্য দপ্তরের তদন্ত কমিটি) মুখোমুখি হলেও এখনও কেউই সিআইডির মুখোমুখি হননি। তাঁদের এখনও ডাকা হয়নি। তার আগেই শাস্তি দিয়ে দেওয়া হলো। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
তবে এখনই পূর্ণ কর্মবিরতি করতে চাইছেন না তাঁরা। জানা গিয়েছে, এ দিনের ভোটাভুটিতে অনেক জুনিয়র ডাক্তারই পূর্ণ কর্মবিরতিতে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তবে সাংবাদিক বৈঠকে জুনিয়র ডাক্তাররা বলেন, ‘মানবিকতার কারণে পূর্ণ কর্মবিরতি নয়, আংশিক কর্মবিরতিই চলবে। পূর্ণ কর্মবিরতির বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে ভবিষ্যতে আমরা সেই পথে হাঁটতে পারি।’