সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ৬ ফেব্রুয়ারি: টালা ব্রিজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সাধারণ মানুষের যে চূড়ান্ত অসুবিধা হচ্ছে, তা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে নোয়াপাড়া থেকে অতিরিক্ত ৫ জোড়া মেট্রো চালু করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এই বছরের জুলাইতে চালু হতে চলেছে নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা। মেট্রো রেল আশা করছে যে এই পরিষেবা শুরু হওয়ার পর যাত্রী সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছাবে। এই সময় মেট্রো আবার ৩০০টি পরিষেবা পুনরায় শুরু করার পরিকল্পনা করছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বেশ কিছু পরিষেবা কম করে দিয়েছিল কারণ মেট্রো কর্তৃপক্ষ উপলব্ধি করে যে তাদের পর্যাপ্ত রেক নেই।মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ যোশী জানিয়েছেন, জুলাইতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রেক চলে আসবে, তখন সব পরিষেবা পুনরায় চালু করে দেওয়া হবে।
চেন্নাইয়ের আইসিএফ থেকে নির্দিষ্ট সময়েই চলে আসার কথা রয়েছে মেধা রেকসের। রেক সংক্রান্ত সব সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মেট্রো আধিকারিক আরও জানিয়েছেন যে, ডালিয়াল রেকসের ট্রায়াল রানও চলছে যেটি মার্চে সম্পূর্ণ হবে বলে মনে হচ্ছে। চিনের প্রযুক্তি আধিকারিকরা তাদের পুরো দল নিয়ে কলকাতায় মেট্রো রেলের ট্রায়াল রান দেখে গিয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। যোশী বলেন, ‘দক্ষিণেশ্বর মেট্রো চালু হওয়ার পরও আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ রেক থাকবে।’
টালা ব্রিজ বন্ধ হওয়ার জন্য অসুবিধায় নিত্য যাত্রীরা। তবে মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে যে, নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর যেতে ৮ মিনিট সময় লাগবে এবং তার জন্য ২৪টি রেকের প্রয়োজন, যদি দক্ষিণেশ্বরে দ্বিতীয় পরিষেবা দেওয়া হয়। দু’টি রেককে আলাদাভাবে রাখা হয়েছে। দক্ষিণেশ্বরে মেট্রো পরিষেবা সহজ করার জন্য প্রয়োজনীয় কাজও চলছে নোয়াপাড়া ইয়ার্ডে। দক্ষিণেশ্বরে রেক রাখা যাবে না বলেই জানা গিয়েছে।
মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল এ বছরের জুন মাসের মধ্যেই দক্ষিণেশ্বরে মেট্রো পরিষেবা চালু করে দেওয়ার। আমি রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের (আরভিএনএল) অতিরিক্ত দলকে এই পরিষেবা বাড়ানোর বিষয়টিতে নজর দিতে বলেছিলাম। টালা ব্রিজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে আমরা ওই এলাকার মানুষের অসুবিধার কথাটা বুঝতে পেরেছিলাম। নিত্যযাত্রীদের যাতায়াত করতে যে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হচ্ছে এই মেট্রো পরিষেবা তাঁদের জন্য আর্শীবাদ স্বরূপ। অফিস যাত্রী ও পড়ুয়ারা যাঁরা সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে চান তাঁদের জন্য এটা খুবই সুবিধাজনক হবে।’
মেট্রো কর্তৃপক্ষ এরপর ৩২ কিমি দীর্ঘ গড়িয়া-বিমানবন্দর (রাজারহাট হয়ে) মেট্রোর কাজও পরিদর্শন করতে যান। মনোজ যোশী জানিয়েছেন, প্রচুর খালের ওপর মেট্রোর স্তম্ভ নির্মাণ করতে হয়েছে যার জন্য প্রসারিত লাইনটি বেশ জটিল। তিনি বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির সঙ্গে ক্রমাগত কথা বলে চলেছি। ৫ কিমি প্রসারিত নিউ গড়িয়া থেকে হেমন্ত মুখার্জি (রুবি) পর্যন্ত ছোট মেট্রো পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা করছি। যদিও এই রুট চালু করার আগে তিনটি বিষয় সমাধান করতে হবে। একটি খাল রয়েছে যেটিকে মাপতে হবে। কিছু জমিও অধিগ্রহণ করতে হবে। আরভিএনএলের ইঞ্জিনিয়ার এই মেট্রো পরিষেবার জন্য সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা করছেন।’