আমাদের ভারত,৩১ জানুয়ারি: নির্ভয়া কাণ্ডের দোষীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য ফাঁসি স্থগিত করল দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। অতএব আগামী কাল ফাঁসি হচ্ছে না নির্ভয়া কাণ্ডের চার দোষীদের। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার পিছিয়ে গেল দোষীদের ফাঁসি।
আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি ছিল। শনিবার সকালে নির্ভয়ারনৃশংস ধর্ষক তথা হত্যাকারীদের ফাঁসি দেওয়ার জন্য চূড়ান্ত তৎপরতা শুরু হয়েছিল। ফাঁসুড়েও পৌঁছেছিল জেলে। গোটা দেশ অপেক্ষাতে ছিল। কিন্তু তার আগে শুক্রবার বিকেলে এল ফাঁসি স্থগিতের নির্দেশ। আপাতত স্থগিত হয়ে গেল নির্ভয় আর চার অপরাধীর ফাঁসি। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ফাঁসি হবে না বলে জানিয়েছে দিল্লির পাটিয়ালা হাউস আদালত।
বৃহস্পতিবার আদালতে ফাঁসি স্থগিতের আর্জি জানানো হয়েছিল। অপরাধীদের আইনজীবীর যুক্তি ছিল ফাঁসির সাজা প্রাপ্ত বিনয়ের প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে রাষ্ট্রপতি এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। অক্ষয় কুমার সিং এবং পবন গুপ্ত তাদের সামনে আইনত যেসব সুযোগ রয়েছে তা খতিয়ে দেখতে ইচ্ছুক। এই আর্জি শোনার পরই দিল্লির অতিরিক্ত দায়রা বিচারক অজয় কুমার জৈন তিহার জেল সুপারের কাছে দোষীদের সম্পূর্ণ রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। স্থগিত হয়ে যায় ফাঁসি।
অন্যদিকে, ফাঁসির মাত্র একদিন আগে অর্থাৎ শুক্রবার আবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল নির্ভয়া কাণ্ডের আর এক অপরাধী পবন। সুপ্রিম কোর্টে আবেদন সে জানিয়েছিল নির্ভয়ার ওপর তারা যখন নির্মম অত্যাচার চালিয়েছিল সেই সময় সে ছিল নাবালক। এর আগেও একাধিকবার নির্ভয়া কাণ্ডের সময় সে নাবালক ছিল বলে তা প্রমাণ করার অদম্য চেষ্টা করেছে এই ২৫ বছরের পবন। প্রত্যেকবারই তার দাবি খারিজ করেছে আদালত। গত ২০ জানুয়ারি পবনের স্পেশল লিভ পেটিশনও খারিজ করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। দিল্লি হাইকোর্টে তাকে অপরাধী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণার সময় এবিষয়টি খারিজ করে দেয়।এবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আর মামলার এই দিকটি নিয়ে শুনানিতে সম্মত হননি। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন একই বিষয় নিয়ে বারবার আবেদন করা যায় না। এর আগেই পবনের বয়স সংক্রান্ত নথি জমা দেওয়ার জন্য তার আইনজীবী এ পি সিং কে তিরস্কার করেছিল দিল্লি হাইকোর্ট।
২০১২ সালের ২৩শে ডিসেম্বর দিল্লির রাস্তায় চলন্ত বাসে প্যারামেডিকেলের এক ছাত্রীর ভয়াবহ অত্যাচার করে গণধর্ষণ করা হয়। চারজনের মধ্যে একজন নাবালক হওয়ায় তিন বছর হোমে থেকে সে মুক্তি পায়। আরেকজন রামসিং তিহার জেলে আত্মহত্যা করে।বাকি চারজন শনিবার সকালে ছটায় ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল। গোটা দেশে ফাঁসির অপেক্ষায় থাকলেও সেই ফাঁসি আপাতত স্থগিত হয়ে গেল।