শ্রীরূপা চক্রবর্তী, আমাদের ভারত, ১৪ এপ্রিল: এভাবে পয়লা বৈশাখ কাটাবে বাঙালি সম্ভাবত কখনো ভাবেনি। বাঙালির পয়লা বৈশাখ কার্যত একলা বৈশাখে পরিণত করল মারণ ভাইরাস করোনা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল ইংরেজি বছর ২০২০ দু হাজার বিশ …. বিষে পরিণত হয়েছে। আর ১২ মাসের ১৩ পার্বণে মেতে ওঠা বাঙালির বছরে প্রথম উৎসবটাতেই একলা হয়ে গেল। অনেকেই নববর্ষের দিনটা শুরু করে মন্দিরে পুজো দিয়ে। কিন্তু এবার আর তা হবার নয়। সামাজিক দূরত্ব বিধি মানতে মন্দিরে যেতে পারবে না বাঙালি। নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়ে ভরসা শুধু ঘরে একলা বসে ফোন কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া।
তবে পয়লা বৈশাখে যেটা নিয়ে বাঙালির সব চেয়ে বেশি মাতামাতি তাহল হালখাতা। কিন্তু লকডাউনে হালখাতা হয়তো তোলা থাকবে দোকানের তাকেই। কারণ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানে নমো নমো করে পুজো হলেও বন্ধ অলংকার কিংবা জামাকাপড় সহ অন্য জিনিসের দোকান।
কোন দিন গেলে যাত্রা শুভ হবে, অথবা কোন দিন দেখে মেয়ের বিয়ে ঠিক করব। কিংবা কবে হবে পৈতে- অন্নপ্রাশন। এসব জানার চটজলদি মুশকিল আসান বাংলা পঞ্জিকা। আর নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই বাঙালির দিনযাপনের চিরসঙ্গী সেই পঞ্জিকারও প্রবেশ বন্ধ হতে চলেছে এবছর।
হালখাতা সঙ্গে পঞ্জিকার সম্পর্ক অনেক সাত জন্মের। এবছর হালখাতার পাঠ তো উঠেই গেছে। গুদাম ভর্তি ছাপা পঞ্জিকা থাকলেও তা আম বাঙালির হাতে তুলে দেওয়ার জন্য কোন পরিবেশক নেই।
লকডাউনের শেষে আদৌ পরিবেশক পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়েও সন্দিহান প্রকাশকেরা। বাঙালির যে কোন সামাজিক উৎসবের ছক কসাই যায়না পঞ্জিকা ছাড়া। অথচ সেই পঞ্জিকার গৃহপ্রবেশ হবে না এবার নববর্ষে।
তবে গবেষকরা বলছেন মানুষের করোনার পরের জীবনে আমুল পরিবর্তন আসতে চলেছে। পরিবর্তন আসবে ব্যাক্তিগত স্তর থেকে আর্থ-সামাজিক সমস্ত ক্ষেত্রেই। ফলে করোনা গেলেও বাঙালি আদৌ কতটা এই সামাজিক উৎসবে প্রান খোলা আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ পাবে তাও প্রশ্নের মুখে। তবু আশা আমাদের দেখা হবে মহামারীর শেষে আগের মতো করে….