মেদিনীপুরের বর্ষীয়ান বিধায়ক মৃগেন্দ্রনাথ মাইতি প্রয়াত, বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

কুমারেশ রায়, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ ডিসেম্বর: প্রয়াত হলেন মেদিনীপুর বিধানসভার দু’বারের বিধায়ক মৃগেন্দ্রনাথ মাইতি (৭৭)। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দিন তিনেক আগে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালে। গত কয়েকদিনে প্রবীণ এই বিধায়কের অবস্থা ক্রমেই সঙ্কটজনক হয়। রবিবার বিকেল থেকে অবস্থার আরও অবনতি হয় বলে জানা যায় দলীয় সূত্রে।

এরপর, রাত ঠিক ১০টা নাগাদ তাঁর ‘মৃত্যু খবর’ চাউর হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তা ছোট-বড় দলীয় নেতা থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যম ও সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। শহরের বিভিন্ন পার্টি অফিসে, দলীয় পতাকাও অর্ধনমিত করে রাখার কাজ শুরু হয়। মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে জানা যায়, তিনি ‘ভেন্টিলেশনে’ আছেন, অবস্থা সংকটজনক হলেও, প্রয়াত হননি। এরপরই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম, নিজেদের বিভিন্ন সূত্র ধরে সঠিক খবর জানার চেষ্টা করেন। বিভিন্ন সূত্রে বিভিন্ন খবর জানা যায়। তবে, দলীয় সূত্রে গতকাল রাতে জানানো হয়, তিনি সঙ্কটজনক অবস্থায় ভেন্টিলেশনে আছেন। আজ সভা চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী জানান, “মৃগেন দা গুরুতর অসুস্থ, আমার মন তাঁর কাছেই পড়ে আছে।” এরপরই সভা শেষে, তিনি সরাসরি চলে আসেন মেদিনীপুর শহরের সিপাইবাজারে মৃগেন্দ্র নাথ মাইতির বাসভবনে। সেখানে তিনি জানান, প্রয়াত হয়েছেন প্রবীণ এই বিধায়ক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে শোক জ্ঞাপন করলেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে বললেন, “দীর্ঘদিনের এই সৈনিককে হারিয়ে আমি মর্মাহত। দলের প্রতি তাঁর অবদান, সরকারি কর্মচারীদের জন্য লড়াই ভোলার নয়। তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আমরা তাঁর পরিবারের পাশে আছি।”

জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন মৃগেনবাবু। ছিল হাই ব্লাড সুগার এবং ব্লাড প্রেসারও। ফলে, বারবার অসুস্থ হয়েছেন তিনি। কলকাতা থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেও এসেছেন। কিন্তু, গত কয়েকদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতা আশঙ্কাজনক হয়। প্রথমে, মেদিনীপুর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এরপর, তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালের (পিজি) উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানেই, ৭৭ বছর বয়সে ৭ ডিসেম্বর তিনি পরলোকগমন করলেন। নিঃসন্তান মৃগেন্দ্রনাথ বাবু রেখে গেলেন, অসুস্থ স্ত্রী সুজাতা মাইতি (৭২), ভাই মৃগাঙ্ক মাইতি ও তাঁর পরিবার-পরিজনদের। আজ সন্ধ্যে নাগাদ মেদিনীপুর শহরের বাসভবনে প্রয়াত নেতার মরদেহ পৌঁছবে বলে দলীয় সূত্রে জানাগেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *