আমাদের ভারত, ২৯ জুন: কোচবিহারের মাথাভাঙ্গায় বিজেপি সংখ্যালঘু কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধরের ঘটনায় আরো একটি নতুন অভিযোগ তুলে সরব হলেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। দলের মহিলা মোর্চার নেত্রীর অভিযোগ, ওই মহিলা কর্মীকে মারধর ও হেনস্থা শুধু মহিলারাই নন জড়িতে ছিলেন পুরুষরাও, সিবিআই তদন্তে দাবি করেছেন তিনি। যদিও তৃণমূলের দাবি, এটি একটি পারিবারিক ঘটনা। যেটাকে রাজনৈতিক রঙ দিতে চাইছে বিজেপি।
নির্যাতিতা বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা কমিটির সদস্যা। মাথাভাঙ্গা রুইডাঙ্গা এলাকায় তিনি মাঠ থেকে ফেরার সময় তাকে ধরে গালি গালাজ মারধর করেন কয়েকজন তৃণমূলের মহিলা কর্মী। তাকে বিবস্ত্র করে পেটানো হয়। শাড়ি খুলে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় পাশের নদীতে। এরপর তিনি অজ্ঞান হলে তাকে এক কিলোমিটার টেনে হেঁচড়ে নিয়ে এসে তার বাড়ির সামনে ফেলে দিয়ে যাওয়া হয়। এ বিষয়ে ঘোকসাডাঙ্গা থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি প্রথমে। পরে চাপে পড়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এখনো তদন্ত চলছে।
এর পরেই শুক্রবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সরেজমিনে ঘটনা খতিয়ে দেখতে অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্বে একটি সাত জনের প্রতিনিধি দল গঠন করে দেন। শনিবার সেই দল নির্যাতিতা মহিলার সঙ্গে দেখা করতে কোচবিহারে যায়। অগ্নিমিত্রা নেতৃত্বে তারা কোচবিহার পুলিশ লাইন চৌপতিতে গিয়ে পথ অবরোধ করেন। বেশ কিছুক্ষণ পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে প্রতিনিধি দল দেখা করে, তারপর নির্যাতিতার সঙ্গেও কথা বলেন অগ্নিমিত্রা।
তার সঙ্গে দেখা করার পর অগ্নিমিত্রা বলেন, নির্যাতনের সময় সেখানে মেয়েরা যেমন ছিল, তেমন পুরুষেরাও ছিল। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকে ওই পরিবারের উপর অত্যাচার চালাচ্ছিল তৃণমূল। কারণ ওই পরিবার বিজেপিকে সমর্থন করে। এখন নির্যাতনের ঘটনাকে পুলিশ পারিবারিক বিবাদের ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু এটা পারিবারিক ঘটনা নয়। তাঁর কথায়, “আমরা শুনেছি গল্পের গরু গাছে ওঠে। কিন্তু এখানে গল্পের গরু নবান্নে ওঠে। নবান্ন থেকে গল্প তৈরি করে পুলিশকে দিয়ে বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা আমরা হতে দেব না।” কেন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলার রুজু হলো না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে দু’ একজন অভিযুক্ত জামিন পেয়ে গিয়েছে। পুলিশ নির্যাতিতার কাছ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো বয়ান নেয়নি। নিজেদের মতো করে ধারা দিয়ে দিয়েছে। তিনি আবার সিবিআই তদন্তের দাবি করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
অগ্নিমিত্রা পালের অভিযোগ প্রসঙ্গে কোচবিহারের জেলা তৃণমূল মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, এর সঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসা বা রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। এটা সম্পূর্ণভাবে একটি পারিবারিক ঘটনা। ইতিমধ্যেই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে।