পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ১০
জুন: কোলাঘাটের পয়াগ গ্রামে বেআইনি বাজি তৈরী ও বিক্রি বন্ধের দাবিতে জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দেওয়া হলো এসইউসিআই’য়ের পক্ষ থেকে।
কোলাঘাট ব্লকের পুলশিটা গ্রাম পঞ্চায়েতের পয়াগ গ্রামের মাইতি (বান্দার) পাড়ায় দীর্ঘ প্রায় ৫০- ৬০ বছর ধরে ২০ থেকে ২৫টি পরিবার বেআইনিভাবে বাজি বানিয়ে ব্যবসা করছে। এর ফলে কয়েক বছর অন্তর ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। তাতে ইতিমধ্যেই অনেক মানুষ মারা গিয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই এলাকায় এই কারবারের প্রসার বেড়ে চলেছে। যখনই এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে, তখনই স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনকে খানিকটা সক্রিয় হতে দেখা যায়। তারপর তাদের আর কোন ভূমিকাই লক্ষ্য করা যায় না। ফলে বেড়ে চলেছে এই ধরনের ঘটনা। শুধু তাই নয়, এই ব্যবসায় অত্যধিক লাভের সুযোগ থাকায় ওই পাড়ার যে সমস্ত মেয়েদের অন্যত্র বিয়ে হয়েছে, তারা সেখানেও এই বেআইনি কারবারের সাথে যুক্ত রয়েছে।
গতকাল রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ ওই পাড়ায় আনন্দ মাইতির বাড়িতে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তাতে কারখানার গোডাউন, দোতলা বাড়ি ভেঙ্গে যায়। বাড়ির দেওয়াল ভেঙ্গে ইট পাশের গণেশ মাইতির বাড়িতে তার ঘুমন্ত স্ত্রীর উপর পড়ে গেলে তিনি গুরুতর জখম হন। আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি এবং পরবর্তীতে তমলুক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এসইউসিআই কমিউনিস্ট দলের পক্ষ থেকে আজ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে ঘনবসতিপূর্ণ ওই পাড়ায় ওই বেআইনি বাজি তৈরী ও বিক্রির ব্যবসা বন্ধে অবিলম্বে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত ও আহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
দলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য নারায়ণ চন্দ্র নায়ক আজ সকালে বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের জানান, পয়াগের বিস্ফোরণের ঘটনা এই প্রথম নয়, এর আগে অন্ততঃ ছ’বার মারাত্মকভাবে বিস্ফোরণ হয়েছে। সবশেষ কয়েক বছর আগেও তিন জন মারাও গিয়েছিল। কিন্তু তারপরও এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন তেমন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় গতকালের ওই ঘটনা ঘটলো। এমতাবস্থায় উপরোক্ত দাবিতে জেলা ও মহকুমা শাসক, বিডিও, পুলিশ সুপার, এসডিপিও সিআইওসি’কে আজ দলের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে ওই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।