আমাদের ভারত, ৩০ এপ্রিল: চলতি বছরের ২২ শে জানুয়ারি অযোধ্যার রাম মন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। দেশ বিদেশ থেকে লাখ লাখ মানুষ এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু অন্যান্য বেশ কয়েকটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের মতো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে যাননি। বাংলায় ভোট প্রচারে এসে সেই প্রসঙ্গ তুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কটাক্ষ করে তিনি বলেন,অনুপ্রবেশকারীদের ভয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অযোধ্যায় যাননি।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতার মতো বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে। কিন্তু এই অনুষ্ঠানে তৃণমূল নেতৃত্ব যাবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল। উল্টে সেদিন কলকাতার রাজপথে সংহতি মিছিলে হেঁটেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। আর এই নিয়ে বাংলায় প্রচারে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেককে নিশানা দাগলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি প্রশ্ন তুললেন কেন রাম মন্দিরে যাননি তারা? অবশ্য তাঁর ব্যাখ্যাও নিজেই করলেন শাহ।
তৃতীয় দফা ভোটের আগে মঙ্গলবার বাংলায় এসেছেন অমিত শাহ। বর্ধমান পূর্বের বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারের সমর্থনে মেমারিতে সভা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। একাধিক বিষয় নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে আক্রমণ করেন তিনি। তবে আজ সরাসরি অভিষেকের নাম একবারও মুখে আনেননি তিনি। বরং ভাইপো উল্লেখ করেই একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে বাংলা শাসক দলকে তুলোধনা করেন তিনি।
মমতা এবং অভিষেকের রাম মন্দির উদ্বোধনে না যাওয়া নিয়ে অমিত শাহ বলেন, মমতা দিদি ও ভাইপোকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, কিন্তু অনুপ্রবেশকারীদের ভয়ে তারা রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার দিন যাননি। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, অনুপ্রবেশকারীদের ভয় বলতে মুসলিম ভোট হারানোর ভয় বলতে চেয়েছেন অমিত শাহ। নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলার ভবিষ্যৎ মুখ্যমন্ত্রী হওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
লোকসভা ভোটের আগে ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সিএএ কার্যকর করেছে মোদী সরকার। প্রথম থেকেই এর বিরোধিতা করে এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমোর এই বিরোধিতা নিয়েও সরব হন অমিত শাহ। তাঁর মতে এবার মমতা অভিষেকের বিদায় নেওয়ার পালা।
রাম মন্দির ছাড়াও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের বিরোধিতার প্রসঙ্গ তুলে অমিত শাহ বলেন, বাংলার মানুষও চায় কাশ্মীরে ভারতের পতাকা উড়ুক। তাই মমতা দিদি আপনার না চাওয়াতে কিছুই এসে যায় না।
বিজেপির অন্যান্য নির্বাচনী প্রচারের মতোই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদী কী কী কাজ করেছেন সেই খতিয়ান তুলে ধরেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিনামূলের আসনে চাল দেওয়া থেকে শুরু করে, ১২ লক্ষ মানুষের ঘরে শৌচালয় তৈরি, চার কোটি মানুষের বাড়ি তৈরি, ১০ কোটি মানুষের কাছে গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া সবই মোদীর জন্য সম্ভব হয়েছে বলে দাবি তাঁর। একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদীর কাজকে বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছাতে দেয় না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। অমিত শাহ আহ্বান জানান, আগামী দিনে মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করুন তবেই বাংলার মানুষ আয়ুষ্মান প্রকল্প সহ একবারে সব সুবিধা পাবেন।