রাজেন রায়, কলকাতা, ১৮ জানুয়ারি: নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তিনি নিজে দাঁড়াবেন বলে সোমবার দুপুরে মাস্টার স্ট্রোক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পাল্টা মমতার খাস তালুকে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী যে চ্যালেঞ্জ ছুড়বেন, তা প্রত্যাশিত ছিল। আর বাস্তবিক হলও তাই। মুখ্যমন্ত্রীর জবাবে দাপটের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর ঘোষণা, ‘আজকের তারিখ সময় দেখে লিখে রাখুন। ৫০ হাজার ভোটে যদি মাননীয়াকে না হারাতে পারি, আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।’
নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে মমতা দাঁড়াবেন এই ঘোষণার পর থেকেই বিজেপি প্রচার শুরু করে দিয়েছে, যে নিজের খাস তালুকে হারের আতঙ্কে ভুগছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত বিধানসভা নির্বাচনে দীপা দাশমুন্সির বিরুদ্ধে মাত্র ২১ হাজার ভোটে জিতেছিলেন তিনি। যেহেতু সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম তার রাজনৈতিক উত্থানের আবেগ, সেই কারণে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে নন্দীগ্রামকেই বেছে নিলেন তিনি। নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে মমতা এটাও ঘোষণা করেছেন, আগে তিনি শুধু টাকা দিয়ে দিতেন অধিকারী পরিবার সবটা দেখে নিত। তবে এবার তিনি সম্পূর্ণ টা নিজে দেখবেন। এছাড়াও কোনও ভুল হয়ে থাকলে তার জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থী এমনটাও জনসভায় বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার মাস্টারস্ট্রোকের জবাবে তৃণমূলনেত্রীর গড় থেকেই খোলা চ্যালেঞ্জ শুভেন্দুর। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই মমতার খাসতালুক থেকে শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি নাম করে তৃণমূল নেত্রীকে কটাক্ষ করলেন, ‘নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়াবেন? সে দাঁড়াতেই পারেন আপনার দলে কোনও শৃঙ্খলা নেই। যে যা খুশি সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন। আপনি আপনার ভাইপো যা খুশি ঘোষণা করতে পারেন। কিন্তু বিজেপি পার্টিটা শৃঙ্খলিত। এখানে যে কেউ কে দাঁড়াবেন ঘোষণা করতে পারে না। ওটা আপনার প্রাইভেট লিমিটেডে হয়। কথা দিচ্ছি, পদ্মফুল হাতে নিয়ে পার্টি আমাকে দাঁড়াতে দিক বা অন্য কেউ নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়ান, ৫০ হাজার ভোটে মাননীয়াকে হারাতে না পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।’
নন্দীগ্রাম নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমোর আবেগ নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর প্রশ্ন, ‘নন্দীগ্রামের জন্য উনি কী করেছেন? ভোট এলে নন্দীগ্রামের কথা মনে পড়ে। আপনি তো নন্দীগ্রাম আসেন ৫ বছর অন্তর।’ এখানেই শেষ নয়, দক্ষিণ কলকাতার সভা থেকে আক্রমণের সুর আরও চড়িয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘তৃণমূল প্রাইভেট লিমিটেডের নেত্রীর এত বুদ্ধি যে, ২৯৪ আসনেই ওনাকে মুখ হতে হয়েছে। জেলার পর্যবেক্ষণেও উনি। এত বুদ্ধি নিয়েও বিহার থেকে ঠিকাদার ভাড়া করে এনে বুদ্ধি ধার করতে হচ্ছে। বাংলায় এখন তৃণমূলের জন্য সেফ কোনও জায়গা নেই৷’ জোড়াফুল শিবিরের উদ্দেশে শুভেন্দুর চ্যালেঞ্জ, ‘যে যেখানে দাঁড়াবেন দাঁড়িয়ে যান, শুধু বলে দিন কত ভোটে হারাতে হবে৷’