মমতার অবস্থান পরিবর্তন! গণভোট নয়, এবার নাগরিক আইন নিয়ে বিশিষ্টদের দিয়ে জনমত সমীক্ষার দাবি

আমাদের ভারত,২০ ডিসেম্বর:নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বৈধতা বিচার করতে রাষ্ট্রসঙ্ঘকে দিয়ে গণভোটের দাবি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু দাবি করার মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যেই নিজের সেই অবস্থান পরিবর্তন করলেন তৃণমূল নেত্রী। এবার গণভোটের বদলে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিশিষ্টদের দিয়ে জনমত সমীক্ষার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

গণভোটের দাবি তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে তীব্র আক্রমণ শানায় বিজেপি। রাজ্যপালও তাকে হুঁশিয়ার করেন। কার্যত চাপে পড়েই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজের অবস্থান বদল করলেন বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। তাই শুক্রবার গণভোট নয় নাগরিক আইন নিয়ে বিশিষ্টদের দিয়ে জনমত সমীক্ষার দাবি করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রানী রাসমণি রোডে নাগরিকত্ব আইন বিরোধী জনসভায় রাষ্ট্রসঙ্ঘের মতো নিরপেক্ষ সংস্থার তত্ত্বাবধানে দেশজুড়ে গণভোট করানোর দাবি করেন মমতা। আর এরপরই মমতার উদ্দেশ্যে তীব্র আক্রমণ সানাই বিজেপি। তারা অভিযোগ করে ভোটের রাজনীতির জন্য দেশের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নের মুখে ফেলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা বেলা মমতা বলেছিলেন “আমি চাই রাষ্ট্রসংঘ বা মানবাধিকার কমিশনের মতো নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান তত্ত্বাবধানে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশজুড়ে গণভোট হোক।” আর এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে বিজেপি দাবি করে দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের হস্তক্ষেপ দাবি করে ভারতের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। সাংবিধানিক পদে থেকে মুখ্যমন্ত্রী এই ধরনের মন্তব্য করতে পারেন না বলেও মন্তব্য করেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকর।

গণভোটের দাবির প্রেক্ষিতে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করে টুইটে লিখেন “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও আপত্তিকর এক পথ বেছে নেওয়ার কথা জনসমক্ষে বলেছেন। আমার আবেদন না মেনে তিনি আমাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। এতে আমি দুঃখিত।এর ফলে দেশের গণতান্ত্রিক চরিত্রে বিশেষ ক্ষতি সাধন হবে।”

এরপরই শুক্রবার তৃণমূল ভবনে দলের বিধায়ক সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই নিজের অবস্থান থেকে সরে আসতে দেখা যায় তাকে। গণভোটের দাবির মন্তব্যের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন,’আমি নিরপেক্ষ সংস্থার দ্বারা গণভোট করানোর কথা বলেছিলাম। উদাহরণ হিসেবে রাষ্ট্রসঙ্ঘের কথা উল্লেখ করেছি। আমি চাই নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে গণভোট হোক।’ যারা দেশের মধ্যে গণ্যমান্য এবং মানুষ যাদের বিশিষ্টদের তালিকায় ফেলে,যাদের সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগাযোগ নেই এমন মানুষদের মতামত নেওয়া হোক এই আইনের ক্ষেত্রে।

একইসঙ্গে তিনি কেন্দ্র সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন বলেন,গায়ের জোর না দেখিয়ে মানুষের আন্দোলনকে মেনে নিন। দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *