আমাদের ভারত, ১৮ জুন:
২ মে ভোটের ফল ঘোষণার দিন কালীঘাটের বাড়ি থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন নন্দীগ্রামের ভোট গণনায় কারচুপি হয়েছে। এবিষয়ে নির্বাচন কমিশনে পিটিশন দাখিল করবে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার দেড় মাস পরে সেই পথেই হাঁটলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। নন্দীগ্রামে ভোটের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের ইলেকশন পিটিশন দাখিল করলেন ওই আসনের তৃণমূল প্রার্থী।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে এই পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। একুশের বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামই ছিল মূল আকর্ষণের কেন্দ্র। তেখালির জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নন্দীগ্রামের প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। আর ওইদিন বিকেলে রাসবিহারীতে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু বলেছিলেন মাননীয়াকে হাফ লাখ ভোটে হারাবেন। স্বভাবতই এই সবকিছু ভোটের উত্তাপকে চরমে তুলেছিল।
নন্দীগ্রামের ভোট ঘটনাও ছিল যথেষ্ট নাটকীয়। প্রতিমুহূর্তে উত্তেজনার পারদ ছিল ঊর্ধ্বমুখী। প্রথমে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়ে দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জিতেছেন নন্দীগ্রামে। কিন্তু তার কিছুক্ষণ পরেই নন্দীগ্রামে বেশ কয়েকটি রাউন্ডের গণনা শুরু হয় বলে জানা যায়। একেবারে থ্রিলার তৈরি হয় গণনা কেন্দ্রকে ঘিরে।
এরপর তৃণমূল ২০০ পার করলেও সবাই অপেক্ষা করেছিল কী হয় নন্দীগ্রামে সেই দিকে। তারপর নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে ১৬০০-র বেশি ভোটে নন্দীগ্রামের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী।
মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী সঞ্জয় বসু বলেছেন, গণনায় কারচুপি সহ নির্বাচন সংক্রান্ত একাধিক বিষয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ এই মামলার শুনানি হবে। বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে।
গণনা শেষে শুভেন্দুকে জয়ী হিসেবে কমিশন ঘোষণা করার পর রাজনৈতিক মহলের দুটি মত উঠে এসেছিল। সবাই বলেছিলেন, তৃণমূলের এই বিপুল জয় মোটেই সুখকর হলো না। কারণ দলের নেত্রী হেরে গিয়েছেন। আর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবার পর শুভেন্দুও বার বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দিয়েছেন, “অনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী” বলে। আবার কেউ কেউ বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের তরফে ২৯৪টি আসনের প্রার্থী। তাই নন্দীগ্রামে তাঁর হেরে যাওয়া অপ্রাসঙ্গিক। তবে রাজ্যবাসীর মে আজকের মামলার দিকে নজর থাকবে তা বলাই বাহুল্য।