রাজেন রায়, কলকাতা, ৩০ ডিসেম্বর: বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে পুলিশকে চড় মারার অভিযোগে আত্মসমর্পণ করে ৩০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন নিলেন মদন মিত্র। এদিন আদালত চত্বর ঢোকার আগে মদন মিত্র বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তাই
আমি আত্মসমর্পণ করতে এসেছি।’ সেই সময় এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘কেন পুলিশকে চড় মেরেছিলেন আপনি?’ এই প্রশ্নের উত্তরে রসিকতার সুরে সাংবাদিকদের নিজের হাত দেখিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী বলেন, “কবে কোথায় কখন বোম মেরেছি, কাকে চড় মেরেছি জানি না। আমার হাত দেখে মনে হয়, আমি কখনও মশা পর্যন্ত মেরেছি?”
তবে জানা গিয়েছে, মামলাটি এখনকার নয়, ২০০৯ সালের সিপিএম জমানায় নিউ মার্কেট থানায় প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।
এদিন আদালতে হাজিরা দিয়ে মদন মিত্র বলেন, “আমি আইন মানা লোক। আমার বিরুদ্ধে ২৯টি কেস আছে। জেনে রাখুন, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যদি এক লক্ষ মামলা হয় লড়াই কিন্তু হবে।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মদন মিত্রের নামে যে ২৯টি মামলা চলছে তার মধ্যে রয়েছে চিটফান্ড কেলেঙ্কারির মতো গুরুতর বিষয়। তাছাড়াও নারদ মামলাতেও নাম রয়েছে মদন মিত্রের। কিছুদিন আগে সারদা এবং নারদ মামলা নিয়ে ফের যেভাবে সক্রিয় হয়েছে সিবিআই, তাতে ভোটের আগে ফের এই নিয়ে তোলপাড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিশেষত সারদা মামলায় মন্ত্রিত্ব হারিয়ে দীর্ঘদিন জেলে থাকতে হয় তাকে। তবে জেল থেকে বেরিয়ে বেশ কিছুদিন নির্বাসনে থাকার পর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ব্যাঙ্কশাল আদালতের সামনে নিজের পুরনো মেজাজে দেখা গেল মদন মিত্রকে।
এক সময় তৃণমূলে ঝাড়গ্রামের দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এবার সেই ঝাড়গ্রামেই নেতাইয়ে ছত্রধর মাহাতোকে নিয়ে সভা করতে যাচ্ছেন মদন মিত্র। তাঁর আগে এদিন ব্যাঙ্কশাল আদালত থেকে দলের প্রাক্তন নেতাকে মদন মিত্রের হুঁশিয়ারি, “৭ তারিখ নেতাই যাচ্ছি। ছত্রধর মাহাতো সঙ্গে থাকবো। যদি কোনও মাইকা লাল থেকে থাকে, তো আমাদের যাত্রা পথে পদ্ম ফুটিয়ে দেখাক।” এমনকি শুভেন্দুকে আক্রমণ করতে গিয়ে মেদিনীপুরের অধিকারী পরিবারকেও ছাড়েননি মদন মিত্র। জওহরলাল নেহরুর পরিবারের ‘আত্মবলিদান’-এর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “ভারতবর্ষে একটা পরিবার ছিল। নেহরু পরিবার। তাঁরা দুটো লাশ দিয়েছে (ইন্দিরা গান্ধী ও রাজীব গান্ধী)। অধিকারী পরিবার একটা লাশও দেয়নি। উল্টে মন্ত্রী থেকে চেয়ারম্যান সব গুরুত্বপূর্ণ পদ নিয়ে রেখেছে।”