রাজেন রায়, কলকাতা, ৩ ডিসেম্বর: আচমকাই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্যাকআপ মন্তব্য করে রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিয়েছিলেন মদন মিত্র। শুভেন্দু, মিহিরের জোড়া ধাক্কার পর তাঁকে ধরে রাখতে সঙ্গে সঙ্গে পরিবহণ দফতরের কমিটিতে দায়িত্ব দিয়ে দেয় তৃণমূল। আর তারপর বৃহস্পতিবার ছিল মদন মিত্রের জন্মদিন। জন্মদিনে খোশমেজাজে তার সেই মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন তিনি। সরাসরি না বললেও তার মন্তব্যে পরিষ্কার তিনি ঘুরিয়ে আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরকেই।
প্রসঙ্গত লোকসভা ভোটের আগে থেকেই তৃণমূলের রাজনৈতিক পরিচালনায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে প্রশান্ত কিশোর এবং তার টিমের। কিন্তু দল ছেড়ে যাওয়া অনেক বিধায়কের আক্ষেপ, দলটা তারা আবেগে ভালোবেসে করতেন এবং পিকের কর্পোরেট মনোভাবনার সঙ্গে তাদের চিন্তাধারা মিলছে না। সাম্প্রতিক সময়ে শুভেন্দু থেকে মিহির গোস্বামী এমনকি ব্যারাকপুরের শীলভদ্র দত্ত কেও বোঝাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে পিকের টিম। রাজনৈতিক সংযোগে কর্পোরেট ধাঁচ অনেকেই মানতে পারছেন না। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নের মুখে প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাক টিম।
প্যাক আপ প্রসঙ্গে মদন মিত্র বলেন, “যাঁরা অভিনয় জগতে আছে, তাঁরা মুখে রং মেখে থাকে। আমাদের কোনও রং মাখার স্কোপ নেই। আমাদের সবটাই লাইভ এবং মানুষের সামনে। এখন মুখ আর মুখোশ বা স্টাইল আর ফ্যাশনের লড়াই ছেড়ে দিয়ে আসুন আমরা তৃণমূলের মুখশ্রীটা ভালো করি। আমার প্যাক-আপ মন্তব্যের অর্থও ছিল এটা যে, অনেক সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখনও যদি আমরা গোটাটা প্যাক আপ না করে বেঁধে ফেলতে না পারি তা হলে হবে না। প্যাক আপ মানে শুধু রং তোলা নয়, এর মানে গেট আপও। এখন গেট আপের সময়।”
এছাড়াও এদিন ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, “আনঅর্গানাইজড সেক্টরের কর্মী এবং পরিবহণ কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা পাইয়ে দিতে সরকার আমাকে একটা দায়িত্ব দিয়েছে। সেই দায়িত্ব পালন করতে আমি একটা অফিস করব। আমি দুই-একদিনের মধ্যেই জানিয়ে দেব কোথায় অফিস করা হবে, কোথায় তাঁরা আবেদন করবে। তবে আমাকে ই-মেল বা হোয়াটসঅ্যাপ করেও আবেদন করতে পারেন। সবাই যাতে এই সুবিধা পায় তা আমি দেখব।”
তবে পুরনো পরিবহনমন্ত্রী কে ফিরে পেয়ে আশ্বস্ত পরিবহণ কর্মীরাও। এদিন বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের তরফে ভাড়া বৃদ্ধি-সহ একগুচ্ছ দাবি জানানো হয় প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রীকে। তাছাড়া ট্যাক্সিচালকরাও যাতে স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আসে সে বিষয়টি দেখতে তাঁকে অনুরোধ করা হয়। বিষয়টি তিনি গুরুত্ব দেবেন বলে জানিয়েছেন মদন মিত্র।

