Krishnanagar, প্রেমিকাকে গণ নির্যাতন করে প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ, কৃষ্ণনগরে আটক প্রেমিক

স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ১৬ অক্টোবর: লক্ষ্মী পুজোর আগেই লক্ষ্মীর বিসর্জন। যেখানে এখনো তিলোত্তমার বিচার অধরা তার রেশ কাটতে না কাটতেই যুবতীর অর্ধনগ্ন দেহ চিৎকার করে বিচারের আর্জি জানাচ্ছে। ধিক্কার জানাচ্ছে পুরুষতন্ত্র সমাজের প্রতি।

পুলিশ সুপারের অফিসের ঢিল ছোড়া দূরত্ব এলাকায় গণধর্ষণ করে খুন করা হলো এক যুবতীকে। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের ঘটনা। গণধর্ষণ করে ফেলে যাওয়া অর্ধনগ্ন ও পোড়া মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনাটি ঘটে বুধবার সকালে নদিয়ার কৃষ্ণনগরের কোতয়ালি থানার দুর্গা বারোয়ারী এলাকায়।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার সকালে স্থানীয় মানুষজন প্রাতঃভ্রমণ করতে গিয়ে যুবতীর আধ পোড়া মৃতদেহ দেখতে পায়। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় কোতোয়ালি থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মৃত যুবতীর বয়স আনুমানিক ২০-২১ বছর এবং প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, অন্য কোথা থেকে তাকে খুন করে তার মুখে আগুন ধরিয়ে ওই এলাকায় মৃতদেহটি ফেলে রেখে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রাথমিক অনুমান, ধর্ষণের পর তাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে প্রমাণ লোপাটের জন্য। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার পুলিশ। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ নির্যাতিতার প্রেমিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। তার বাবা পিন্টু আচার্য ফুলের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। পুলিশের তরফে মৃতার বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মৃতার পরিবারের লোকজন কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানায় এসে উপস্থিত হয়। পরিবারের অভিযোগ, প্রেমিক ও তার বন্ধুরা মিলে গণধর্ষণ করে খুন করেছে তাদের মেয়েকে। ইতিমধ্যেই থানায় পৌঁছেছেন মৃতের পরিবার।

পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে সম্প্রতি বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তাঁদের। পুজোর সময় প্রেমিকের সঙ্গে পিৎজা খেতে বেরিয়েছিলেন তিনি। পরিবারের অভিযোগ, মেয়ে প্রেমিকের সঙ্গে বেরনোর পরে রাত বাড়লেও না ফেরায় চিন্তায় অভিযুক্তকে ফোন করেন তারা। প্রথমে ফোন না ধরলেও পরে ফোন তুলে মৃতার মাকে গালিগালাজ করেন অভিযুক্ত যুবক। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই কিশোরীর পরিবার। পরিবারের অভিযোগ, গণধর্ষণ করে খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য মুখ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন ওই নির্যাতিতা। জানা যায়, নাচ, গান, পড়াশোনা এবং কম্পিউটার- সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি দক্ষ ছিলেন। গতকাল সন্ধ্যায় আনুমানিক ৭টার দিকে সে বাড়ি থেকে বের হয় এবং এরপর আর সে বাড়ি ফেরেনি। কিশোরীর প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনো স্পষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি। পরিবারের অভিযোগ, কিশোরীর প্রেমিক ও তার বন্ধুরা নানা অজুহাত দিয়ে পরিস্থিতি এড়ানোর চেষ্টা করেছে। পুলিশের তরফ থেকে নির্যাতিতার প্রেমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *