আমাদের ভারত, ৯ সেপ্টেম্বর: আজ আর জি কর কান্ডের শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ এই ঘটনায় রাজ্য সরকার ও পুলিশের ভূমিকায় একাধিক প্রশ্ন তুললেও জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি শেষ করে কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে। আর তারপরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছেন, কাজে ফিরুন। আমি এখনো চাই না কারোর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ করতে। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকেই হুঁশিয়ারি হিসেবে দেখছেন অনেকে। এর পাল্টা জবাব দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, কতজন ডাক্তারবাবুকে সাসপেন্ড করতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখি। তার কথায় সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে সেটার উপর দাঁড়িয়ে সিদ্ধান্ত নেবে চিকিৎসকরা। বিজেপি চিকিৎসকদের সঙ্গে আছে।
আজ সুপ্রিম কোর্ট যেমন জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি শেষ করে কাজে ফেরার সময় বেঁধে দিয়েছে। একই সঙ্গে রাজ্যকে চিকিৎসকদের যথাযথ নিরপত্তার ব্যবস্থা করতে বলেছে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু করার জন্য যা যা করার দরকার করতে হবে। আমি এখনো চাই না কারোর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ করতে। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “রাজ্য ব্যবস্থা নিতে চাইলে ব্যবস্থা নিক। যদিও এটা ডাক্তারদের বিষয়ে, জুনিয়ার ডাক্তারদের উপরেই আমরা সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেবো। কিন্তু আমি মনে করি গণতান্ত্রিক দেশে সবার প্রতিবাদ করার অধিকার আছে, তারাও প্রতিবাদ করছেন। প্রতিবাদ হওয়া উচিত। বিজেপি ডাক্তারবাবুদের পাশে আছে। সুপ্রিম কোর্ট থেকে যদি ন্যায় না পায়, আন্দোলন করবে। সমস্ত ডাক্তারবাবুদের যদি সাসপেন্ড করা হয়, কতজন ডাক্তারবাবুকে সাসপেন্ড করতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখি।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ফলে ৭০ হাজারের বেশি ইনডোর পরিষেবা দিতে পারেনি, ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর উত্তরে সুকান্ত মজুমদার বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য দপ্তর কী অবস্থায় আছে সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি। স্বাস্থ্য দপ্তরের বর্জ্য পদার্থ পর্যন্ত বিক্রি হয়ে গিয়েছে। পরিষেবা দিয়ে করবেন টা কী? স্বাস্থ্য দপ্তর পরিষেবা দিয়ে মানুষকে বিপদের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে তো। কাল দেখা যাবে মানুষের এইডস হয়ে গেছে। অন্য কোনো রোগ হয়েছে। কোনো ছোঁয়াচে রোগ হয়েছে, যা একজন থেকে অন্য জনের দেহে চলে যাবে। এই ধরনের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তৈরি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে আজ জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফেরার সাথে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে উৎসবে ফেরার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ১ মাস তো হলো এবার উৎসবে ফিরুন। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের বিরোধীতায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। সুকান্ত মজুমদার বলেন, “বাংলার মানুষ এই উৎসব মন খারাপ নিয়েই পালন করবে। দেবী দুর্গা আসেন, উমাকে নিজের ঘরের মেয়ের মত বরণ করি আমরা। এবার বাঙালি মন খারাপ করেই পালন করবেন পুজো। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর আনন্দ উচ্ছ্বাস হয়েছে। উনি ওনার ভাইপো ভাতিজাকে নিয়ে পালন করবেন কোনো অসুবিধা নেই।”
নির্যাতিতার পরিবার দাবি করেছেন, পুলিশের এক আধিকারিক তাদের টাকা দিতে চেয়েছিলেন। একথা মুখ্যমন্ত্রী ভুল বলে দাবি করেছেন। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার আজ বলেছেন, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য সভা মঞ্চ থেকে আমরা সবাই শুনেছি। তিনি বলেছিলেন, দশ লাখ টাকা তো দেওয়াই যেতে পারে। যে মুখ্যমন্ত্রী সভা মঞ্চ থেকে একথা বলছেন, তার পুলিশ গিয়ে টাকা অফার করেনি এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? মানতে পারা যায়? প্রকাশ্য সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ১০ লাখ টাকা তো দেওয়াই যেতে পারে।”