Lakshmir Bhandar, Chandrakona, প্রায় চারবছর ধরে এক মহিলার লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ঢুকছে অন্যের অ্যাকাউন্টে, ঘটনায় শোরগোল চন্দ্রকোনায়

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ মার্চ: লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প তৃণমূল সরকারের তুরুপের তাস বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহল। রাজ্যের একটা বড় অংশ মহিলা ভোটার। আর সেই মহিলা ভোটের সিংহভাগই শাসক দলের ভোটব্যাঙ্ক। এতে বড়ো ভূমিকা পালন করে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প। এই প্রকল্প আর রাজ্যে সীমাবদ্ধ নেই, ভিন রাজ্যের ভোটে মহিলা ভোট টানতে এই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পকে অনুসরণ করা হয়, এমনই দাবি করে এরাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।আর এই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সমস্যা বা অভিযোগও সামনে এসেছে। এবার লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ঢুকছে অন্যেরর অ্যাকাউন্টে।এক মহিলার লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা অন্য এক মহিলার অ্যাকাউন্টে ঢুকছে, এমনই অভিযোগ সামনে এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনায়। ঘটনা চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের মনোহরপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেড়াবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সাবানা খাতুনের।

স্বামী স্ত্রী দু’জনের অভিযোগ, ২০২১ সালে প্রথম দুয়ারে সরকার শিবিরে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের আবেদন পত্র জমা দেন। তারপর থেকে তাদের অ্যাকাউন্টে প্রকল্পের কোনো টাকা ঢোকেনি। তার পর দুয়ারে সরকার শিবিরের মাধ্যমে দফায় দফায় পুনরায় প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার জন্য আবেদন জমা করান।দম্পত্তির অভিযোগ, মাসখানেক আগে তারা খোঁজ নিতে শুরু করেন লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা কেন ঢুকছে না। আর এই খোঁজ নিতে গিয়েই ব্লকের বিডিও অফিসে লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মীর কাছে জানতে পারেন ২০২১ সালে প্রথম আবেদন করা লক্ষ্মীর ভান্ডারের আবেদন পত্রই আপ্রুভ হয়েছে। আর সেই লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা প্রতিমাসে অন্য এক মহিলার অ্যাকাউন্টে ঢুকছে। ঘটনা জানতে পেরে ব্লকের বিডিওকে এই সমস্যা সমাধানের লিখিত আবেদন জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি বলে দাবি সাবানা খাতুন ও তার স্বামী সেখ আখতার আলীর।নতারা চাইছেন অন্য মহিলার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকা বন্ধ করে যাতে প্রকল্পের টাকা সাবানা খাতুন পায় তার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।

এরকম সমস্যা কী করে হলো? প্রশাসনের বিরুদ্ধেই গাফিলতির অভিযোগ তুলছে চন্দ্রকোনার এই দম্পতি।জানাগেছে, চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকেরই মাণিককুন্ডু গ্রাম পঞ্চায়েতের কাসন্ড গ্রামের একই নাম সাবানা খাতুন নামের বাসিন্দার অ্যাকাউন্টে ঢুকছে বেড়াবেড়িয়া গ্রামের সাবানা খাতুনের লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা। তৎকালীন সময়ে কর্মীদের টেকনিক্যাল ভুলের কারণেই এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে এমনটাই ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর।

তবে এবিষয়ে চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের বিডিও কৃষ্ণেন্দু বিশ্বাসের প্রতিক্রিয়া নিতে গেলে তিনি কিছু বলতে চাননি। এবিষয়ে চন্দ্রকোনা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সম্পা মন্ডল বলেন, “এবিষয়ে আমার কিছু জানা নেই, আমার কাছে আসেনি। তবে ওনারা আমার কাছে আসলে আমি আমাদের দপ্তরের স্টাফকে ডেকে যে এই ডিপার্টমেন্ট দেখে তাকে দিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধান করে দেবো। আমি ওনাদের ডেকে পাঠাবো।”

বেড়াবেড়িয়া গ্রামের সাবানা খাতুন ও তার স্বামী সেখ আখতার আলীর অভিযোগ, প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কেউ গুরুত্ব দেয়নি। যার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে তার খোঁজ করে তাকে বিডিও অফিসে ডেকে পাঠানোও হয়। কিন্তু মূল সমস্যার সমাধানে কেউ পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে দাবি সাবানা খাতুন ও তার স্বামীর। এখন দেখার প্রশাসন কী ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *