সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৬ জুন: দশহরা মানেই বাঁকুড়ায় ঘুড়ি উৎসব। ভো কাট্টা আওয়াজে এদিন ঘুম ভাঙে বাঁকুড়ার। হিন্দু ধর্মীয় মতে দশহরার দিন গঙ্গার মর্তে আগমন। এদিন মন্দিরে মন্দিরে বিশেষ পূজাপাঠের আয়োজনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্হানে মনসা পূজারও রীতি রয়েছে। এইসবের সাথে এদিন ছেলে বুড়ো সবাই মাতেন ঘুড়িতে। এদিন ঘটা করে চলে ঘুড়ি ওড়ানোর, ভো কাট্টার অলিখিত প্রতিযোগিতা।
সকাল হতেই ছেলে ছোকরার দল লাটাই হাতে ছাদে হাজির। গতকাল বিকেলে কালবৈশাখীর জন্য তাপমাত্রা অনেকটাই কমে যায়, যা ঘুড়ি ওড়ানোর পক্ষে অনুকূল।আকাশ পানে তাকালেই দেখা মিলবে হরেকরকমের ঘুড়ি।রোদ উপেক্ষা করেই চলে ঘুড়ি ওড়ানো। বাড়ির অভিভাবকদের কড়া শাসানি আজকের দিনে কিছুটা হলেও লঘু হয়, কোনও ছাদে আবার দেখা যায় ছেলেদের সাথে পাকা মাথাদেরও যোগ দিতে। মেয়েরাও এগিয়ে আসে উৎসাহ দিতে এমন ঘটনাও ঘটে। আর মাঝে মধ্যেই সমস্বরে ভো কাট্টা আওয়াজ। এই আওয়াজে আবার নস্টালজিক হয়ে ওঠেন প্রবীনরা।
সত্তোরোর্দ্ধ প্রণব দাস, গৌতম পাল’রা জানান, আমাদের ছোটবেলায় সাতদিন আগে থেকে চলতো প্রস্তুতি। কাঁচের শিশি, বোতল সংগ্রহ করে তা হামালদিস্তায় মিহি গুঁড়ো করে সাবু, আঠার সাথে মিশিয়ে সুতোয় মাঞ্জা দেওয়া হতো। হাতেই তৈরী হোত ঘুড়ি। এখন তো সুতো থেকে ঘুড়ি সব রেডিমেড। এখন নব্বই টাকা থেকে দেড়শো টাকা ডজন ঘুড়ি। আধুনিক ইন্টারনেটের যুগেও কিন্তু হারিয়ে যায়নি প্রাচীন রীতি। যদিও বর্তমানে ঘুড়ির প্রচলন ক্রমশঃ কমে আসছে।
বাঁকুড়ায় দশহরায় ঘুড়ি ওড়ানোর রেওয়াজ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে।
এই দিনটিকেই কেন ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে, এর সাথে অন্য কোনো কারণ জড়িয়ে আছে কি না, যদিও তার কোনও তথ্য আজও মেলেনি।