আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ১৬ ফেব্রুয়ারি: চলন্ত টোটো থেকে ঝাঁপ দিয়ে অপহরণের ছক ভেস্তে দিল পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। ছোট্ট শিশুর উপস্থিত বুদ্ধিতে পুলিশের জালে অভিযুক্ত টোটো চালক কৃষ্ণগোপাল মন্ডল। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট হাইস্কুলের ওই ছাত্র তারকনাথ কর্মকারের অসাধারণ বিচক্ষণতায় অবাক খোদ পুলিশ কর্মীরা। ঘটনার তদন্তে বালুরঘাট থানার পুলিশ।
বালুরঘাট শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নামাবঙ্গী এলাকার স্কুল পাড়ার বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ কর্মকারের ছেলে তারকনাথ। গত বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার জন্য নামাবঙ্গী এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণগোপাল মন্ডলের টোটোতে চেপেছিল সে। কিন্তু তাকে বাড়ির দিকে না নিয়ে গিয়ে অনেক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে শহরের রঘুনাথপুর এলাকায় নিয়ে যায় ওই টোটো চালক। ঘটনা বুঝতে পেরে প্রতিবাদ করতেই ছাত্রকে গঙ্গারামপুরে বিক্রি করে দেওয়ার হুমকি দেয় অভিযুক্ত টোটো চালক বলে অভিযোগ। তার পরেও টোটো না থামিয়ে যেতে থাকলে শিশুটি চলন্ত গাড়ি থেকে ঝাঁপ দিয়ে লোকের ভিড়ে লুকিয়ে পড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘ সময় পর ওই টোটো চালক শিশুটিকে খুঁজে না পেয়ে চলে গেলে অন্য টোটো ধরে বাড়ি ফেরে ছোট্ট তারকনাথ। প্রথমে বিষয়টি তাঁর পরিবারের কাছে গোপন রাখে শিশুটি। যদিও শুক্রবার রাতে এমন খবর পেতেই পরিবারের তরফে শনিবার ঘটনা জানিয়ে বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ শিশুটিকে সঙ্গে নিয়ে ওই সব এলাকায় ঘুরে বেশকিছু তথ্য সংগ্রহ করে। তবে শহর জুড়ে হাজারেরও বেশি টোটো থাকায় নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায় পুলিশের কাছে। যার পর অবশ্য ছোট্ট শিশুর বিচক্ষণতায় অভিযুক্তকে ধরা সহজ হয়ে যায় পুলিশের কাছে। পুলিশকে শিশুটি জানায়, তাকে টোটোতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় তার স্কুল ব্যাগে থাকা স্কেচপেন দিয়ে টোটোর গায়ে বেশকিছু চিহ্ন এঁকে দিয়েছিল সে । সেই সূত্র ধরেই পুলিশ বেশকিছু টোটো আটক করে শিশুকে দিয়ে দেখিয়ে অভিযুক্তকে পাকড়াও করেছে।
ডিএসপি সদর ধীমান মিত্র জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে আটক করে ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
ছাত্র তারকনাথ কর্মকার জানায়, টোটো চালক তাকে বাড়ির দিকে নিয়ে না যাওয়াতেই তার সন্দেহ হয়েছিল। ভয়ে সে চলন্ত টোটো থেকে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়। সব ঘটনা পুলিশকে জানিয়েছে সে।
ছাত্রের বাবা বিশ্বজিৎ কর্মকার, মা মমতা কর্মকাররা জানিয়েছেন, স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা অভিযুক্ত টোটো চালক। তার টাকার প্রয়োজন থেকেই এমন অপহরণের চেষ্টা করেছিল বলে তাদের অনুমান। ছেলের উপস্থিত বুদ্ধিই তাকে বাঁচিয়েছে। অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।