শপথে এলেন না মোদী, তবু মঞ্চ থেকে তাঁর কাছেই আশীর্বাদ চাইলেন কেজরি

আমাদের ভারত,১৬ ফেব্রুয়ারি: নিজের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কেজরিওয়াল। কিন্তু মোদী আসেননি। বারানসিতে অনুষ্ঠান থাকায় সেখানেই চলে যান প্রধানমন্ত্রী। তাই শপথ গ্রহণের মঞ্চ থেকে মোদীর কাছে দিল্লির উন্নয়নের কাজ করার জন্য আশীর্বাদ চাইলেন কেজরি। বিরোধীদের বাদ দিয়ে মোদীকে যখন নেমন্তন্ন করেছেন তখন থেকেই জল্পনা শুরু। এবার মঞ্চ থেকে মোদীর আর্শীবাদ চেয়ে সেই জল্পনাকে তুঙ্গে তুলে দিলেন মাফলার ম্যান।

রবিবার, তৃতীয়বারের জন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বললেন, কে কাকে ভোট দিয়েছে জানার প্রয়োজন নেই। বিজেপি কিংবা কংগ্রেস নির্বিশেষে তিনি সকলের মুখ্যমন্ত্রী। বিপুল ভোটে জিতেও তিনি বিজেপির নাম মুখে আনেনি। কিন্তু শপথ গ্রহণ মঞ্চ থেকে জানিয়ে দিলেন মানুষ বিজেপিকে ভোট দিক কিংবা কংগ্রেসকে সকলের জন্য কাজ করাই তার লক্ষ্য। কারণ তিনি সকলের মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কেউ আমার পার্টিকে ভোট দিয়েছে,কেউ বিজেপিকে, কেউবা কংগ্রেসকে কেউ আবার অন্য কোন দলকে। কিন্তু শপথ নেওয়ার পর আমি আপনাদের সকলের মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমি গত ৫ বছর শুধু কাজ করেছি কাজের ক্ষেত্রে কোনো ভেদ করিনি। বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন বলে তার কাজ করবো না কখনো বলিনি। সবার জন্য কাজ করেছি। বিজেপির এলাকাতেও পানীয় জলের পরিষেবা পৌঁছেছি। তৈরি করেছি রাস্তা। ২ কোটির দিল্লিবাসীর কাছে আমাদের আর্জি তারা যাকে ভোট দিয়ে থাকুন না কেন আজ থেকে আপনারা সকলেই আমার পরিবার। যেকোনো প্রয়োজনে নির্দ্বিধায় চলে আসবেন আমার কাছে। কে কোন দলের, কে কোন ধর্মের, কে কোন জাতের আমার কাছে তা নিষ্প্রয়োজন।

একইসঙ্গে তিনি বলেন ভোটের সময় যে যা বলেছেন সব ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। দিল্লির জন্য অনেক কাজ করা বাকি তা আমি একা করতে পারবো না। তিনি বলেন, আমাকে যে যা বলেছেন সব ক্ষমা করে দিয়েছি ওদের কাছে অনুরোধ রাজনীতিতে যা হয়েছে ভুলে যান সকলের সঙ্গে মিলে দিল্লির উন্নতিতে কাজ করতে চাই। ”

তাঁর কথায় দিল্লিবাসী নতুন রাজনীতির জন্ম দিয়েছে তারা কাজকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। দিল্লি বাসী ভারতকে ২১ শতকে এই নতুন রাজনীতি শিখিয়েছে। দেশের সমস্ত জায়গায় এই নতুন রাজনীতি ছড়িয়ে পড়ুক। সেই জন্যই অনেকেই বিনামূল্যে ১০০ ইউনিট কিংবা ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা ইতিমধ্যে দিয়েছেন। আর দিল্লিবাসীর জন্যেই এটা সম্ভব হয়েছে।
কেজরিওয়াল বলেন, “কোন নেতা যদি বলেন সরকারি স্কুলের কিছু হবে না এখন দিল্লির মানুষ বলে দিল্লি কে দেখে শিখুন। রাজনীতির সংজ্ঞা পাল্টেছে দিল্লি। নেতা আসবে যাবে দল আসবে যাবে উন্নতির চাবিকাঠি মানুষের হাতে।

এদিনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীকে নিজে আমন্ত্রণ জানান কেজরিওয়াল। কিন্তু রবিবার বারানসি সফরে গেছেন তিনি। সে প্রসঙ্গে কেজরিওয়াল বলেন, “কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে মিলে দিল্লিকে পৃথিবীর এক নম্বর শহর বানাতে চাই। আজকের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম,কিন্তু অন্য অনুষ্ঠানে তিনি ব্যস্ত । তাই আসতে পারেননি।দিল্লির উন্নতির জন্য ওঁর কাছে ও কেন্দ্র সরকারের কাছে আশীর্বাদ চাইছি।

বিনামূল্যে তিনি মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছেছেন বলে তাকে একাধিকবার আক্রমণ করেছেন বিরোধীরা। এদিন সেই মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে কেজরিওয়াল বলেন পৃথিবীতে যা কিছু অমূল্য তা বিনামূল্যেই দিয়েছেন ভগবান। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের কাছ থেকে কেন টাকা নেব? কেন হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেনা মানুষ?দিল্লি কে ভালোবাসেন কেজরিওয়াল, আর কেজরিওয়ালকে ভালোবাসেন দিল্লিবাসী। আর এই ভালবাসার কোন মূল্য হয় না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *