স্বরূপ দত্ত, আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ৪ জুন: “আমি অভিষেক ব্যানার্জির মত দায়জ্ঞানহীন বিরোধী নেতা নই। আমাদের প্রথম ও শেষ কথা অসংখ্য লোকের মৃত্যু হয়েছে, অসংখ্য লোক আহত আছে। প্রধানমন্ত্রী ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের সাথে কথা বলেছেন, নিহতদের পরিবারের লোকেদের আশ্বস্ত করেছেন। আমরা মানুষের জন্য ভাবি। এইরকম পরিস্থিতিতে রাজনীতি করে রাজনীতির রুটি সেঁকা আমাদের কাজ নয়।” রায়গঞ্জ স্টেশনে বৈদ্যুতিক ট্রেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনায় অভিষেক ব্যানার্জি ও বিরোধীদের বক্তব্যের এমনটাই পাল্টা মন্তব্য করেন রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, গত দুই দশকে এমন ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা দেখেনি দেশবাসী৷ ১৯৯৯ সালে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে ঘটে যাওয়া গাইসাই ট্রেন দুর্ঘটনাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে বালেশ্বরের করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনা৷ এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা প্রায় ৩০০৷ আহত বহু। উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদার অনেকেই এই দুর্ঘটনায় হতাহত হয়েছেন। এই শোকের আবহের মধ্যেই রবিবার উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ রেল স্টেশনে পূর্ব ঘোষিত বৈদ্যুতিক ট্রেন পরিষেবার সূচনা করলেন রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী৷ উপস্থিত ছিলেন কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম শুভেন্দু কুমার চৌধুরী ও জেলার ব্যবসায়ী মহলের কর্তা ব্যক্তিরা।
এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দিল্লির ট্রেন প্রসঙ্গে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী বলেন, এলএইচবি কোচ হওয়ার কারণে দেশ জুড়ে লিংক ট্রেন গুলো বাতিল হয়ে গিয়েছে। তাই রায়গঞ্জ থেকে যে দিল্লির ট্রেন চলত তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। আগামী দিনে তার লক্ষ্য সরাসরি দিল্লির ট্রেন বরাদ্দ করিয়ে আনা। সেই চেষ্টা লাগাতার চলছে৷
অন্যদিকে রায়গঞ্জ শহরে যানজট নিরসনে যে ফ্লাইওভার করার কথা ছিল তাও কার্যত বিশবাঁও জলে। এবিষয়ে এদিন রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন রায়গঞ্জের সাংসদ৷ দেবশ্রী দেবীর অভিযোগ, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে রায়গঞ্জের জন্য ওই ফ্লাইওভার বরাদ্দ করে আনা হয়েছে রেলের তরফে। কিন্তু রাজ্য সরকার নো অবজেকশন কাগজ না দেওয়ায় সেই কাজ থমকে আছে। এমনকি একই কারণে ইসলামপুরেও কাজে গতি আসছে না। কেন্দ্রীয় সরকার রেলের উন্নয়নের কাজে আন্তরিক হলেও রাজ্য সরকার গড়িমসি করছে।
তবে বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে রায়গঞ্জের সাংসদ বলেন, অতীতে অনেক ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে৷ কিন্তু এই ট্রেন দুর্ঘটনা যথেষ্ট সন্দেহজনক৷ প্রধানমন্ত্রী নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও আহত ও স্বজনহারাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু বিরোধীরা দায়িত্বজ্ঞান হীনের মতো একটি দুর্ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করছেন। যা এই বিপদের সময়ে কাঙ্খিত নয়৷