আমাদের ভারত, ১৭ নভেম্বর: কসবার তৃণমূল কাউন্সিলরকে প্রকাশ্যে খুনের চেষ্টার ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কড়া ভাষায় পুলিশের সমালোচনা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ এই মন্ত্রী। কিন্তু তার এভাবে পুলিশের সমালোচনা করাকে একাধিক ভাবে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি মনে করিয়েছেন, যে রাজ্য পুলিশের সমালোচনা করছেন ফিরহাদ হাকিম সেই রাজ্য পুলিশের মন্ত্রী খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সুকান্ত মজুমদার সোশ্যাল মিডিয়ায় ফিরহাদ হাকিমের উদ্দেশ্যে কটাক্ষের সুরে স্মৃতি ভ্রমের কথা বলেছেন। তাঁর প্রশ্ন, “যিনি (ফিরহাদ হাকিম) রাজ্যের অদক্ষ পুলিশ বাহিনীর এত কঠোর সমালোচনা করেছেন তিনি কি হঠাৎ স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন?” আবার নিজের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি লিখেছেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যিনি রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও কাজ করেন, তিনি কালীঘাটে তার প্রতিবেশী। ইনিই রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে। পুলিশে অ্যাকশনের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের নিপীড়ন করেন।” অর্থাৎ যত পুলিশের সমালোচনা করেছেন ফিরহাদ হাকিম, সেই পুলিশ পরিচালনা করেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। অর্থাৎ পুলিশের সমালোচনা করার অর্থ পরোক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করার সামিল।
সুকান্ত মজুমদার আরও লিখেছেন, “এই সমালোচক (ফিরহাদ হাকিম) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য। ফিরহাদ হাকিমের ক্ষোভ কি তার জীবনের প্রতি ভয়ের বহিঃপ্রকাশ মাত্র? তিনিও কি দলের আভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক বিরক্তির কারণে দলের মধ্যে একটি উপদলের টার্গেট করা নিয়ে নিশ্চিত?”
কিন্তু কটাক্ষের সঙ্গে সুকান্ত মজুমদার ফিরহাদের সমালোচনার জন্য তারিফ করে লিখেছেন, “তবু একটি জিনিস স্পষ্ট করার জন্য ফিরহাদ হাকিমকে ধন্যবাদ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে যেমন সাধারণ জনগণ পুলিশের উপর আস্থা হারিয়েছে, তেমনি তৃণমূল নেতারাও তাদের ছদ্মবেশী পুলিশ বাহিনীর উপর আস্থা হারিয়েছে।”
প্রসঙ্গত, কসবার তৃণমূল কাউন্সিলরকে প্রকাশ্যে খুনের চেষ্টার ঘটনায় ক্ষোভ উপড়ে দিয়েছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সাংবাদিক সম্মেলনে ফিরহাদ বলেছেন, এনাফ ইজ এনাফ। উত্তরপ্রদেশের কালচার, বিহারের কালচার, আমেদাবাদের কালচার এখানে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। এটা আমাদের সংস্কৃতি নয়। আমাদের কাউন্সিলের যদি প্রাণ যেতো তার পরিবারের ক্ষতি হতো, আমাদের দলের ক্ষতি হতো। পুলিশকে বলব অ্যাক্সন নাও। মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলার পরেও এত আর্মস আসছে কিভাবে? বলছে মুঙ্গের থেকে নাকি আর্মস আসছে। তাহলে সেটা আটকানো যাচ্ছে না কেন? পুলিশ কী করছে? ইন্টেলিজেন্স কোথায়?” এখনো পর্যন্ত ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে একজনকে আটকও করেছে তদন্তকারীরা।