আমাদের ভারত, ২৯ সেপ্টেম্বর: হিজাব বিরোধী আন্দোলনে সাহায্যের অভিযোগ তুলে ইরাকে নৃশংস ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালালো ইরান। কুর্দ অধ্যুষিত এলাকায় পরপর ৭৩ টি ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোড়া হয়। এখনো পর্যন্ত এই হামলায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৪১ জনের। আহত বহু। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, আহতদের অনেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বুধবার উত্তর ইরাকের কুর্দ অধ্যুষিত এলাকায় জঙ্গিদের ড্রোন হামলা চালানোর কথা ঘোষণা করে ইরান সরকারের ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড বাহিনী। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, ইরাকের কুর্দিস্তান প্রদেশের রাজধানী এরবিল ও সুলাইমানিয়া শহরে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিয়ে আক্রমণ চালায় ইরান।
ভয়ংকর এই আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৩ জন। বোমার আঘাতে গুরুতর আহত আরো ৫৮। ইরাকের কুর্দ প্রশাসন সূত্রে খবর, বুধবার সকালে এরবিল ও সুলেমানিয়ার অন্তত দশটি জায়গায় হামলা চালিয়েছে রেভলিউশনারি গার্ড বাহিনী। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে এখনও তারা মুখ খোলেনি।
ইরানের দাবি, ইরাকে ঘাঁটি গেড়ে সশস্ত্র কুর্দ বিদ্রোহীরা অশান্তি ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে ইরানের উত্তর পশ্চিমে কুর্দ অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সক্রিয় হয়েছে তারা। দেশজুড়ে চলা হিজাব বিরোধী বিক্ষোভে কুর্দ বিদ্রোহীদের মদত রয়েছে বলে দাবি ইরানের রাষ্ট্রপতির। ইরানের সরকারের তরফে বলা হচ্ছে আন্দোলনকে মদত দিতে ইরানের একটি বামপন্থী সংগঠন এবং বেশ কয়েকটি জঙ্গিগোষ্ঠী সাহায্য করছে। তাই ইরান এই হামলা চালিয়েছে।
এদিকে হামলার তীব্র নিন্দা করেছে আমেরিকা। এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস বলেছে দেশে চলা হিজাব বিক্ষোভ থেকে নজর ঘোরাতেই যুদ্ধের আশ্রয় নিয়েছে ইরান। এই হামলায় ইরাকের সার্বভৌমত্বে আঘাত করা হয়েছে। ইরাকের দায়িত্বে থাকা মার্কিন সেনার সেন্ট্রাল গভমেন্ট জানিয়েছে এরবিলের পথে পাড়ি দেওয়া একটি ইরানি ড্রোনকে গুলি করে নামিয়েছে তারা। হিজাব বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে ইরানে। আমিনির হত্যার প্রতিবাদে নীতি পুলিশের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন সেদেশের তরুণীরা। হিজাব জ্বালিয়ে চুল কেটে ইসলামের নামে মহিলাদের শিকলবন্দি করার প্রতিবাদ করেছেন তারা। এদিকে বিক্ষোভ দমনে একাধিক কড়া পদক্ষেপ করছে প্রশাসন। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন ঘরের অশান্তি লুকাতে ইরাকে এই নৃশংস হামলা চালিয়েছে ইরান।