আমাদের ভারত, ২১ মার্চ: ২০২৩-এ ছত্রপতি শিবাজির ৩৫০ বছর পূর্তি। এই উপলক্ষে মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি দেশজুড়ে হবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। দিনটি মর্যাদার সঙ্গে পালন করবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘও। নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালনের আবেদন করা হয়েছে সমাজের সর্বস্তরের মানুষদের পাশাপাশি স্বয়ংসেবকদেরও।
সঙ্ঘের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “ভারতের অন্যতম মহান ব্যক্তিত্ব হলেন ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ। সমাজকে দাসত্বের মানসিকতা থেকে মুক্ত করেছিলেন তিনি। জনমানসে আত্মবিশ্বাস ও আত্মশ্রদ্ধার বোধ জাগিয়েছিলেন। সিংহাসনে বসার পর জৈষ্ঠ্য শুদ্ধ ত্রয়োদশীতে তিনি গঠন করেছিলেন হিন্দাভি স্বরাজ।
ছত্রপতি শিবাজি ছিলেন নির্ভীক, ক্ষুরধার বুদ্ধির অধিকারী, দক্ষ প্রশাসক, যুদ্ধবিশারদ। মহিলাদের সম্মান করতেন তিনি। শিবাজি ছিলেন মনেপ্রাণে হিন্দুত্ববাদী। বিভিন্ন ঘটনা থেকে পরিচয় মেলে ঈশ্বরের প্রতি তাঁর অগাধ বিশ্বাসের। লক্ষ্যে অবিচল থাকতেন তিনি। বাবা-মা ও শিক্ষকদের শ্রদ্ধা করতেন। আনন্দ ও দুঃখে তিনি সর্বদা পাশে থাকতেন স্বদেশবাসীর।
সমাজের সর্বস্তরের মানুষের পাশেও দাঁড়াতেন। শৈশব থেকেই তিনি স্বদেশবাসীকে স্বরাজ প্রতিষ্ঠার জন্য উৎসাহিত করতেন। তাঁর এই শিক্ষা পরবর্তীকালে দেশপ্রেমিকদের কাছে প্রেরণার মন্ত্র হয়ে উঠেছিল। এমনকী তাঁর মৃত্যুর পরে কয়েক দশক ধরে তাঁর সমাজ সমস্ত রকম আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করেছিল। এটি ইতিহাসের একটি মৌলিক উদাহরণ।
ছোট থেকে শিবাজি মহারাজ যে স্বরাজের স্বপ্ন দেখতেন, তা কেবল ক্ষমতা দখল করতে নয়, ধর্ম ও সংস্কৃতি রক্ষা ও প্রতিপালনের জন্য একটা সমাজ গড়তে চেয়েছিলেন, যে সমাজের ‘অহং’ বোধ থাকবে। তিনি বিশ্বাস করতেন এই রাজ্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে ভগবানের ইচ্ছায়।
স্বরাজ প্রতিষ্ঠার সময় অষ্টপ্রধান মণ্ডল, ‘রাজ্য ব্যবহার কোষ সৃষ্টি’ করেছিলেন তিনি। সুচারুভাবে শাসনকার্য পরিচালনার জন্য স্থানীয় ভাষা ব্যবহার করতেন। শিবশক পঞ্জিকা চালু করেছিলেন। রাজভাষা ও রাজমুদ্রায় সংস্কৃতকে মর্যাদা দিয়েছিলেন। “ধর্মস্থাপনার্থ” তিনি “স্বরাজ” প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বর্তমান ভারতও জাতি গঠনের পথেই হাঁটছে। সমাজে জাগাতে চাইছে অহং বোধ। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের সেই জীবনবোধ আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক এবং প্রেরণা জোগায়।“