আমাদের ভারত, ১৯ মে: ভারত কোনো ধর্মশালা নয়, যে গোটা বিশ্বের উদ্বাস্তুদের এখানে আশ্রয় দেওয়া হবে। এক শ্রীলঙ্কার নাগরিককে আটক করার বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানি চলাকালীন মৌখিক পর্যবেক্ষণে এমনটাই বলেছে দেশের শীর্ষ আদালত। সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কয়েকদিন আগে রোহিঙ্গাদের ভারত থেকে হঠানোর বিরুদ্ধে এক মামলাতেও এই একই ভাবনা পরিদর্শিত হয়েছে শীর্ষ আদালতের ভূমিকায়।
শ্রীলঙ্কার তামিল নাগরিককে আটক করার বিরুদ্ধে করা মামলা খারিজ করার সময় এক সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চ জানিয়েছে, ভারত কি গোটা বিশ্বের উদ্বাস্তুদের জন্য আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে? আমাদের নিজেদেরই ১৪০ কোটি জনসংখ্যা রয়েছে। এটা কোনো ধর্মশালা নয়, যে আমরা গোটা বিশ্বের বিদেশি নাগরিকদের জন্য ব্যবস্থা করব।
এই মামলার ক্ষেত্রে আবেদনকারী শ্রীলঙ্কার তামিল নাগরিকের বিরুদ্ধে ইউএপিএ মামলায় অভিযোগ রয়েছে। মাদ্রাজ হাইকোর্ট- এর আগে জানিয়েছিল, সাত বছরের কারাদণ্ড শেষ হওয়ার পর শ্রীলঙ্কার ঐ নাগরিককে অবিলম্বে ভারত ছেড়ে চলে যেতে হবে। কিন্তু সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল সে।
তার আইনজীবীর দাবি, অভিযুক্ত ভিসা নিয়ে দেশে এসেছিলেন। নিজের দেশে তার প্রাণ সংশয় হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন অভিযুক্ত। প্রায় তিন বছর ধরে আটক রয়েছেন সে, বলে জানান আইনজীবী। তখন বিচারপতি দত্ত তার প্রেক্ষিতে বলেন, ওই ব্যক্তির ভারতে বসবাসের কি অধিকার রয়েছে? আইনজীবী জানান, তার মক্কেল একজন উদ্বাস্তু এবং তার স্ত্রী সন্তানরাও ভারতে বসবাস করেন। কিন্তু সেই যুক্তি ধোপে টেকেনি। আদালতে বিচারপতি দত্ত স্পষ্ট করে দেন, সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যারা এদেশের নাগরিক, একমাত্র তাদের ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাসের মৌলিক অধিকার রয়েছে। মামলাকারীর প্রাণের ঝুঁকি সংক্রান্ত আর্জিও আদালত গ্রাহ্য করেনি। ওই ব্যক্তি নিজের দেশে ফিরে গেলে প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কার প্রসঙ্গে বিচারপতি দত্ত বলেন, তাহলে অন্য কোনো দেশে যান। সম্প্রতি রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের ভারত থেকে বিতারণ ঠেকাতে একটি মামলা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলাতেও হস্তক্ষেপ করেনি।