আমাদের ভারত, ৭ অক্টোবর: পুজোর মধ্যে তিলোত্তমা কান্ডে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। তদন্তভার হাতে পাওয়ার ৫৫ দিনের মাথায় প্রথম চার্জশিট জমা দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেখানে সিভিক ভলান্টিয়ারকেই ধর্ষক ও খুনি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এই দাবিকে মানতে নারাজ অনেকেই। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের বড় অংশ থেকে শুরু করে শিল্পী মহল তথা রাজ্য রাজনীতির অনেক নেতাই। আবার অনেকেই সিবিআইয়ের পরের পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করতে চেয়েছেন।
শুরুতে এই মামলার তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছিল সিভিক ভলান্টিয়ারকে। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। ৫৫ দিন পর আজ যে চার্জশিট দাখিল করে তাতে উল্লেখ রয়েছে প্রমাণের ভিত্তিতে মূল অভিযুক্ত হিসেবে সিভিক ভলান্টিয়ারের কথাই উঠে আসছে। সিবিআই- এর দাবি, সেই মূলত খুন ও ধর্ষণের সঙ্গে যুক্ত। তার সঙ্গে অপর দুই অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষ, অভিজিৎ মন্ডলের কথাও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে লেখা হয়, এই দুই ব্যক্তি এই ঘটনাকে লঘু করার চেষ্টা করেছেন, তথ্য প্রমাণের চেষ্টা করেছেন।
কিন্তু এই বক্তব্যের সঙ্গে অনেকে একমত হতে পারছেন না। প্রশ্ন উঠেছে এই নারকীয় ঘটনা একার পক্ষে কী ভাবে ঘটানো সম্ভব?
অভিনেতা চন্দন সেন পরিষ্কার বলেছেন, রাজ্য সরকার দুদিন বাদে ওর জামা কাপড় নিয়েছিল কেন? তার ফরেনসিক রিপোর্ট কোথায়? ও মত্ত অবস্থায় ধর্ষণ করেছে এর ফরেন্সিক রিপোর্ট কোথায়? কিভাবে এটা প্রমাণিত হচ্ছে? তাহলে যতক্ষণ না ফরেন্সিক রিপোর্ট আসছে ততক্ষণ আমি বিশ্বাস করি না একমাত্র ওই এই খুন ও ধর্ষণ করেছে।
প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারীরাও। তাদের বক্তব্য, একজনের পক্ষে এতটা করা অসম্ভব বলে মনে হয়? তাছাড়া একজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে বাঁচাতে কত চেষ্টার কথা শোনা যাচ্ছে, খোদ প্রিন্সিপাল জড়িত কিন্তু শুধু একজন সিভিককে বাঁচাতে এত বড় বড় লোক এগিয়ে এলেন? এটা আমাদের প্রশ্ন। তারা আশাবাদী এটা সিবিআই’য়ের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট। আরো তদন্ত হলে দোষীদের খোঁজ মিলবে।
এই বিষয়ে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ ৫৫ দিনের মাথায় প্রথম চার্জশিট দেওয়াকে দেরি হিসেবে দেখতে নারাজ, তিনি বরং তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত গড়িয়েছে বলেই মনে করেন। সজল ঘোষ বলেন, আমি বিশ্বাস করি সিবিআই নিরপেক্ষভাবে কাজ করেছে প্রকৃত অপরাধীদের ধরার জন্য যা যা করতে হয় তারা সেটা করবে। ৫৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট পেশ বাংলার ইতিহাসে খুব কমই হয়েছে। তার জন্য সিবিআইকে আগে ধন্যবাদ বলা উচিত সবার। আমরা চাই এবার প্রকৃত আসামিদের নাম সামনে আসুক।
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, সিভিক পুলিশকে ধর্ষক হিসেবে চিহ্নিত করেছে সিবিআই। কিন্তু মানুষ অপেক্ষা করবে কেন এই ঘটনা ঘটলো? কারা তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করল? কারা প্রশ্রয় দিল সবটা জানতে চায় মানুষ।