রাজেন রায়, কলকাতা, ৬ জানুয়ারি: এই রাজ্যে রাজভবন এবং নবান্নের সম্পর্ক রীতিমতো তিক্ত, যা জানেন রাজ্যের সাধারণ মানুষও। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার ন্যূনতম ত্রুটি দেখলে তা নিয়ে টুইট করেন রাজ্যপাল, আবার অন্যদিকে রাজ্যের সব কিছুতে ‘রাজভবনের বাড়াবাড়ি’ পছন্দ করেন না খোদ মুখ্যমন্ত্রীও। কিন্তু ইংরেজি নববর্ষের শুরুতে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে ভুললেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে কৌতুহল।
বুধবার বিকেল ৫.১০টা হটাৎ রাজভবনে প্রবেশ করে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন রাজ্যপাল। আবার রাজ্যপাল পক্ষপাত দুষ্ট অভিযোগ করে তাঁর অপসারণের দাবি তুলে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু প্রশাসনের যেমন সংবিধান এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়, তেমনি সাংবিধানিক প্রধানও রাজ্য প্রশাসনকে এড়াতে পারেন না। সেই কারণেই এদিন মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে হাজির হলে রাজ্যপালও সৌজন্য দেখান।
সাক্ষাৎ শেষে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর একটি টুইট করেন। সেখানে লেখা ছিল, তাঁদের মধ্যে ‘নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়’ হয়েছে। কিন্তু সেই টুইট কিছু ক্ষণের মধ্যেই রাজ্যপালের টুইটার হ্যান্ডল থেকে মুছে ফেলা হয়। নতুন টুইটে লেখা হয়, মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে আসায় ‘সস্ত্রীক আমি শুভেচ্ছা জানিয়েছি।’
এদিনই মুখ্যমন্ত্রী টুইট করে জানিয়েছেন, বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর শাহরুখ খান চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। শাহরুখ খান মুম্বই থেকে ভার্চুয়ালি এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ৮ জানুয়ারি বিকেল চারটে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীও এই অনুষ্ঠানের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করবেন। শহরের ৬ টি প্রেক্ষাগৃহে ৫০ শতাংশ দর্শকাসন নিয়ে হবে অনুষ্ঠান। সেই কারণেই অনেকেই অনুমান করছেন মুখ্যমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ জানাতেই গিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের আলোচনায় আইনশৃঙ্খলা-সহ নানা বিষয় উঠে আসার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
তবে, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে তাঁদের এই সাক্ষাৎ যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, তাতে দ্বিমত নেই ওয়াকিবহাল মহলের। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, একুশের নির্বাচনের আগে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর এই সাক্ষাৎ সৌজন্য হলেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।