জানেন কি ইচ্ছেমত পিল খেয়ে সহবাস করলেও বিপদ

আমাদের ভারত, ১৫ নভেম্বর: শুদ্ধ ভাষায় জন্মনিয়ন্ত্রণকারী পিল। এই পিলের বিজ্ঞাপনে বলা হয় “স্বল্প মাত্রার” জন্ম নিয়ন্ত্রণকারী পিল যা সম্পূর্ন “পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন”। এই যে বলা হয় স্বল্প মাত্রার জন্ম নিয়ন্ত্রণকারী পিল, আসলে এর যথেষ্ট পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে।

বিবাহিত জীবনের সাথে মানুষের যৌন জীবন ওতোঃপ্রোতো ভাবে জড়িত। সেই জীবনের নানা প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি জড়িয়ে আছে। পরিকল্পিত পরিবার গড়ে তোলার ভিত্তিটা তাই মজবুত হওয়া চাই। পরিবার পরিকল্পনার সাথে যে বিষয়ের সম্পর্ক রয়েছে তার নাম ‘নিয়ন্ত্রণ’। আরএকটু সহজ করে বললে, “জন্ম নিয়ন্ত্রণ”। এর জন্য রয়েছে “ক্যাফেটেরিয়া অফ চয়েস”। মানে জন্মনিয়ন্ত্রণের একগুচ্ছ পদ্ধতি। সেখান থেকে জেনে বুঝে নিজেদের পছন্দ মত পদ্ধতি বেছে নেওয়া। যেসব পদ্ধতি রয়েছে সেগুলো হল-

১) পিল, ২) ফোম ট্যবলেট, ৩) নরপ্লান্ট, ৪) ইনজেকশন, ৫) লাইগেশন (টিউবেকটমি), ৬) কপারটি, ৭) ভ্যাসেকটমি (for male), ৮) কনডম (for male), ৯) আইইউডি, ১০) ল্যাম (LAM)।

পিল খাওয়ার নিয়মাবলী: জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সাধারণত ২১ অথবা ২৮টির সমন্বয়ে তৈরি হয়।
২১ পিল এর ক্ষেত্রেঃ আপনার মাসিক শুরুর প্রথম দিন থেকে দিনে ১ টি করে খেতে হবে ২১ দিন, এর পর ৭ দিন বিরতি, এর পর আবার পর পর ২১ দিন। মনে রাখবেন মাসিক চক্র শুরু হওয়ার সময় থেকেই পিল খেতে হবে, দেরি করলে কাজ নাও হতে পারে।

২৮ পিল এর ক্ষেত্রেঃ আপনার মাসিক চক্র শুরু হবার দিন থেকে একাধারে ২৮ দিন ২৮ টি পিল খেতে হবে। ২৮ টি শেষ হলে আবার পরবর্তী মাসে তা শুরু করতে হবে, কোনও বিরতি নেই।
আপনার জন্য কোন পিল বা কোন গর্ভনিরোধ ব্যবস্থা ভাল হবে তা জানার জন্য আপনি ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।  আর পিল  কাজ না করলে আপনি  ইমারজেন্সি পিল খেতে পারেন।

অসুরক্ষিত সহবাসের পর পিরিয়ড মিস হলে তার ৫-৭ দিনের মাথায় ইউরিন টেস্ট করান। কালার টেস্ট করে দেখতে হবে গর্ভসঞ্চার হয়েছে কি না। রিপোর্ট পজিটিভ হলে তো হয়েই গেল, না হলে ৫-৬ দিনের মাথায় আবার পরীক্ষা করাতে হবে।

ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম ● রিপোর্ট পজিটিভ হলে ভ্রূণের বয়স ও গর্ভসঞ্চার জরায়ুতেই হয়েছে কি না তা জানতে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো তলপেটের সোনোগ্রাফি করাতে হবে। জরায়ুতে গর্ভসঞ্চার হলে ৭-৯ সন্তাহের মধ্যে হলে প্রথমে মিফেপ্রিস্টন নামের ওষুধ খেতে হবে। তার ৪৮ ঘণ্টার মাথায় খেতে হবে মিসোপ্রোস্টোল। এর পর ২-৩ দিনের মধ্যে পিরিয়ডের মতো ব্লিডিং শুরু হয়ে যাবে। সঙ্গে পেটব্যথা থাকবে। তবে দু- একটা ব্যথার ওষুধেই তাকে আয়ত্তে রাখা যাবে।
এর সপ্তাহ দুই পরে আরএকবার সোনোগ্রাফি করে দেখতে হবে গর্ভপাত সম্পূর্ণ হয়েছে কিনা। এ ছাড়া যদি ওষুধ খাওয়ার পর থেকে অল্প অল্প করে ব্লিডিং চলতেই থাকে, পেটে ব্যথা থাকে, তাহলেও ইনকমপ্লিট। অ্যাবরশনের কথা মাথায় রেখে সোনোগ্রাফি করে পরিস্থিতি যাচাই করে ওয়াশ করার ব্যবস্থা করতে হবে। ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার পরেও গর্ভ সঞ্চার হয়ে গেলে আর ইমারজেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ পিলের কোনো ভূমিকা নেই। এই ওষুধ ওভিউলেশনকে পিছিয়ে গর্ভ সঞ্চার হওয়া আটকায়৷ ১৫০ মিগ্রা লিভোনরজেস্ট্রিল ট্যাবলেট খেতে হয় অসুরক্ষিত সহবাসের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খেলে সাফল্যের হার ৯৫ শতাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *