রাজেন রায়, কলকাতা, ২১ ডিসেম্বর: তিনদিন আগেই দলের কোর কমিটির বৈঠকে ভাঙন নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল রাজনৈতিক গুরু প্রশান্ত কিশোরকে। দলে তার গুরুত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একের পর এক তৃণমূল নেতা। এবার নিজেই নিজেকে চ্যালেঞ্জ দিলেন প্রশান্ত কিশোর। সোমবার রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে টুইট করে তিনি দাবি করলেন, আগামী বিধানসভা ভোটে তিন অঙ্কের আসন তো দূরের কথা, দুই অঙ্কের আসনেও পৌঁছতে পারবে না বিজেপি। আর যদি এমনটা হয়, তাহলে তিনি বাংলার রাজনীতি থেকে সরে যাবেন।
বোলপুরে রোড শো করার সময় অমিত শাহ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে গেছেন, বাংলায় ২০০র বেশি আসন নিয়ে পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সরকার গড়বে বিজেপি। ২০১৯ লোকসভা ভোটে ১৮টি আসন এবং বর্তমানে বিজেপির প্রচার অভিযান দেখে যে কোনও অরাজনৈতিক
ব্যক্তিত্বও বলে দিতে পারবেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের অন্যতম প্রতিপক্ষ হতে চলেছে বিজেপি। তাহলে সেই দল দুই অঙ্কের আসন পেরতে পারবে না, এমন দাবি কি করে করছেন প্রশান্ত কিশোর? বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেকেরই দাবি, রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে নিজের ভাগ্য লিখন পড়ে ফেলেছেন রাজনৈতিক গুরু প্রশান্ত কিশোর। এমনিতেও বিজেপির রমরমা বেশি হলে ভোটের পর দলনেত্রী তাকে ক্ষমতায় রাখবেন না। তার আগে আপাতত চাকরি বাঁচানোর জন্য একবার শেষ হুঙ্কার ছেড়ে রাখলেন তিনি। যাতে তিনি এই পরিস্থিতি সামলাতে সক্রিয় নন, সেটা কখনও মনে না হয়। বিশেষ দ্রষ্টব্য বলে উল্লেখ করে লিখলেন, ‘সেভ করে রাখুন আমার এই টুইট’।
For all the hype AMPLIFIED by a section of supportive media, in reality BJP will struggle to CROSS DOUBLE DIGITS in #WestBengal
PS: Please save this tweet and if BJP does any better I must quit this space!
— Prashant Kishor (@PrashantKishor) December 21, 2020
তবে এসবের উর্ধ্বে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দলে পিকে-র অবস্থান, প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তাঁর উপস্থিতি, আদৌ তৃণমূলে তাঁর পদ কী কিংবা তিনি কোনও বেতনভুক কর্মী কিনা, তা নিয়েই তৃণমূল শিবিরেরই একাংশের মনে কয়েকশো প্রশ্ন রয়েছে। তৈরি হয়েছে ইগোর লড়াই। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সরাসরি প্রশ্নের মুখে পড়েছেন পিকে। দলের ভাঙন হচ্ছে কেন? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জবাবদিহি করতে হচ্ছে পিকে’কে।
সূত্রের খবর, উত্তরে নাকি প্রশান্ত কিশোর জানিয়েছেন, ‘বিজেপি বিভিন্নভাবে এজেন্সির ভয় দেখাচ্ছে। অনেকে লোভে পড়েও এইসব করছে।’ শাহর গত দুদিনের কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে পাল্টা তত্ত্বও উঠে এসেছে। তবে গুছিয়ে জবাব দিতেই টুইটে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন পিকে। সঙ্গে নেত্রীকেও বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর রণকৌশল যদি কাজ না করে, তাহলে রাজনীতির পরিসর ছেড়ে চলে যাবেন তিনি। নিজের অস্তিত্ব বাঁচাতে এই হুঙ্কার দেওয়া ছাড়া প্রশান্ত কিশোরের আর কিছু করার ছিল না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।