আমাদের ভারত, ১৬ এপ্রিল: বুধবার বিকেলে মুর্শিদাবাদের আক্রান্ত তথা ঘরছাড়াদের নিয়ে ভবানীভবনে রাজ্য পুলিশে ডিজি রাজীব কুমারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর সঙ্গে গিয়েছিলেন আরো তিন বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, তাপস রায় ও অর্জুন সিং। প্রথমে ডিজির দেখা না মেলায় ঘরছাড়াদের নিয়ে ভবানীভবনের সামনেই ধর্নায় বসে পড়েন সুকান্তবাবুরা। দীর্ঘ টানা পোড়েনের পর আক্রান্তদের সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করতে ভেতরে যান চারজনের প্রতিনিধি দল।
বৈঠক শেষে ভবানী ভবন থেকে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সুকান্ত মজুমদার। প্রথমেই বলেন, আশ্বস্ত হাওয়ার মতো কিছু পেলাম না। আমরা একাধিক দিক তুলে ধরেছি। পুলিশ দুঃস্থদের খাওয়াতে পারছে না। এদিকে আমরা যখন ত্রাণ দিতে যাচ্ছি আমাদের আটকে দিচ্ছে।
তাঁর অভিযোগ, আমাদের তোলা সমস্ত অভিযোগগুলি উনি (ডিজি) শুনেছেন। কিন্তু রাজ্য পুলিশের প্রধান হয়েও উনি এই ঘরছাড়াদের এমন কিছু বললেন না যাতে এনারা আশ্বস্ত হয়। ডিজি শুধু বললেন, আমরা আইন মেনে কাজ করবো।
এরপরই বাংলায় অশান্তি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে সুকান্ত মজুমদার বলেন, আমরা যে যে প্রশ্ন করেছি তার উত্তর পাইনি। বিএসএফ- পুলিশ পাশাপাশি থাকলে পুলিশ সব থেকে বেশি দাঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম। কারণ ওরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এদিকে আক্রান্তরা বলছে বিএসএফ বেশি ভালো কাজ করছে। এদিকে ডিজি আমাদের জানিয়েছেন, পুলিশ নাকি পর্যাপ্ত ছিল না, অর্থাৎ গোয়েন্দা বিভাগ তাদের আগাম কোনো খবরই দেননি। এটার মানে একটাই, তারা ব্যর্থ, কিন্তু এই ব্যর্থতার দায়ের নেবে কে? বুধবারের বৈঠকের পর প্রয়োজন হলে আক্রান্তদের নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানান সুকান্ত মজুমদার। মুর্শিদাবাদে যেখানে অশান্তি হয়েছে সেখানে বিএসএফ ক্যাম্প খোলার দাবি জানান সুকান্ত মজুমদার।
প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদের অশান্তির জেরে ঘর ছাড়া বহু পরিবার। কোনো রকমে নদী পথে তারা আশ্রয় নিয়েছিলেন মালদায়। একেবারে প্রাণ হাতে করে তারা পালিয়েছিলেন। এদের মধ্যেই কয়েকজন আসেন কলকাতায়। কথা বলেন বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে। তাদের যন্ত্রণার কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সোজা চলে যান ভবানী ভবনের সামনে। তাঁর দাবি, রাজ্য পুলিশের ডিজিকে কথা বলতে হবে ঘরছাড়াদের সঙ্গে। কিন্তু প্রথম দিকে ডিজির পরের পদমর্যাদার পুলিশ কর্তারা এসে কথা বলতে চান বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে, কিন্তু সুকান্ত মজুমদার স্পষ্ট জানান, ডিজিকেই কথা বলতে হবে। এই দাবিতে ভবানী ভবনের গেটের সামনে তারা বসে পড়েন ঘরছাড়াদের সঙ্গে নিয়েই। নিজেদের দাবিতে অনর ছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। সুকান্ত মজুমদার জানান, ঘরছাড়ারা বিজেপির সঙ্গে কথা বলতে চান। আমরা তাদের সঙ্গে রয়েছি।
সেখানে এক আক্রান্ত মহিলা জানান, পুলিশ বাঁচায়নি, বাঁচিয়েছে বিএস এফ। আমাদের কেটে ফেলে দিত। সব মিলিয়ে ভবানী ভবনের সামনে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়তে থাকে। তাদের দাবি, এলাকায় বিএসএফ ক্যাম্প করতে হবে, তবেই তারা সেখানে থাকতে পারবেন। আতঙ্কের কারণে তারা গ্রামে ফিরতে পারছেন না। পরে ডিজি বৈঠকে বসার জন্য প্রতিনিধি দলকে ডেকে পাঠান।