আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ৫ মার্চ: উত্তরপ্রদেশ সরকার অসহযোগিতা করছে। তাই এবার কুম্ভে হারিয়ে যাওয়া স্বামীকে ফিরে পেতে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হলেন স্ত্রী। স্বামীর ছবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রামপুরহাট মহকুমা শাসকের কাছে আবেদন পত্র জমা দিলেন স্ত্রী মঞ্জু রাউত। মহকুমা শাসক আবেদনপত্র মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি গ্রামের অনেকের সঙ্গে টুরিস্ট বাসে বীরভূমের মল্লারপুর থেকে কুম্ভস্নানের উদ্দেশ্যে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ গিয়েছিলেন বামাপদ রাউত। ২৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কুম্ভস্নান ঘাটের ৪ নম্বর সেক্টরে পৌঁছে যান। সন্ধের দিকে ত্রিবেণী সঙ্গম ঘাটে একই সঙ্গে সকলে স্নান সারেন। ফেরার সময় গ্রামের লোকজন তাঁকে আর দেখতে পাননি। বাবার নিখোঁজের খবর পেয়ে ছেলে বাপি রাউত ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে প্রয়াগরাজ পৌঁছে যায়। ওইদিন বাপি সংশ্লিষ্ট দারাগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্বামীর কোনো খোঁজ মেলেনি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।
গ্রামের বাসিন্দা বামাপদ রাউতের সফরসঙ্গী দুখু রাউত বলেন, “আমরা তিনটি বাসে ২৫০ জন কুম্ভ গিয়েছিলাম। ২৪ ফেব্রুয়ারি ৪ নম্বর সেক্টরে ত্রিবেণী সঙ্গম ঘাটে স্নান সেরে সকলে বাসে ওঠার জন্য কুম্ভমেলা ছেড়ে চলে যাই। বাসে উঠে দেখি বামাপদ রাউত নেই। এরপর আমরা ফের মেলার মাঠে গিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। কিন্তু কোনো খোঁজ পাইনি। এরপর মেলা মাঠে পুলিশ ক্যাম্পে গেলে তারা অসহযোগিতা করেন। প্রথমে বলে খোয়াপায়া কেন্দ্রে যেতে। মেলা উপলক্ষ্যে উত্তরপ্রদেশ সরকার নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য ওই পুলিশ কেন্দ্র খুলেছিল। ডিজিট্যাল পদ্ধতিতে নিখোঁজ ব্যক্তিদের তথ্য রেকর্ড করে উদ্ধারের ব্যবস্থা করার কথা ওই পুলিশ কেন্দ্রের। কিন্তু সেখানেও কোনো সহযোগিতা পায়নি। এরপর তাদের কথা মতো কোতোয়ালি, থানা তারপর দারাগঞ্জ থানায় গিয়ে নিখোঁজ অভিযোগ জমা করি। কিন্তু পুলিশ কোনরকম সহযোগিতা করছে না।”
বামাপদর স্ত্রী মঞ্জু রাউত বলেন, “আমার স্বামী প্রান্তিক চাষি। তিনিই বাড়িতে চাষাবাদ করে সংসার চালান। তাঁর নিখোঁজের খবর পেয়ে আমি ভেঙে পড়ি। এরপর আত্মীয়দের বাড়িতে খোঁজখবর করি। ছেলে এখনও প্রয়াগরাজে রয়েছে। কিন্তু কোনো খোঁজ মেলেনি। তাই মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হলাম। মহকুমা শাসকের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনলাম। ডাকযোগে একই আবেদন জানানো হয়েছে জেলা শাসক এবং জেলা পুলিশ সুপারের কাছে। আমার আশা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে নিরাশ করবেন না।”
মহকুমা শাসক সৌরভ পাণ্ডে জানান, আবেদনপত্র মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।