কুমারেশ রায়, আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ৪ জানুয়ারী: সমাজ থেকে এখনো যে মানবিকতা হারিয়ে যায়নি তার প্রমান রাখলেন জঙ্গলমহলের যুবক বাপ্পা মাহাত৷ কপর্দকশূন্য এক পথচারীকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন।
জানা যায় বর্ধমানের আলমপুর থানা এলাকার বাসিন্দা মহেশ্বর মুর্মু ঝাড়গ্রামের লোধাশুলি থেকে লালগড় – মেদিনীপুর রাজ্য সড়ক ধরে হেঁটে যাচ্ছিল। লালগড় থেকে ঝিটকার ঘন অরণ্য পথ পেরিয়ে ঝিটকাতে প্রবেশ করে। উস্কোখুস্কো চুল, পরনে নেই ভালো শীতের পোশাক, খালি পা। পথচারী মহেশ্বরের এই অবস্থা দেখেই কৌতুহল জন্মায় ঝিটকার যুবক বাপ্পা মাহাতর। ছেলেটির নাম, ঠিকানা ও কোথায় যাবে তা জানতে চাইলে ওই পথচারী জানান, তার নাম মহেশ্বর মুর্মু বাবার নাম সুকচাঁদ মুর্মু , বর্ধমানের আলমপুর থানা এলাকায় বাড়ি। কিন্তু এতো দুরে বাড়ি তাহলে হেটে হেটে যাচ্ছে কেন? বাপ্পা ফের জানতে চাইলে মহেশ্বর জানান, আসলে বাড়ি যাওয়ার মতো তার হাতে কোনো টাকা নেই, নেই খাওয়ার মতো টাকাও। কিন্তু বাড়ি যেতেই হবে। মিলিত হতে হবে পরিবারের সাথে৷ তাই বাড়ি হেঁটে হেঁটে যাবো।
মহেশ্বরের এই কথা শুনে তাকে সাহায্যের হাত বাড়িতে দেন বাপ্পা। যে বাপ্পা এলাকায় সমাজসেবী ও একজন জঙ্গল ও পশুপ্রেমিক হিসেবে সুপরিচিত। সেই বাপ্পা মহেশ্বরের খাওয়ার ব্যাবস্থা করে। পরে তার বাড়ি যাওয়ার মতো আর্থিক সহায়তা করার পাশাপাশি রাস্তায় যাতে অভুক্ত থাকতে না হয় সেজন্য সঙ্গে কিছু খাবার দিয়ে বাসে তুলে দেন।
মহেশ্বরের কাছে জঙ্গলমহলের বাপ্পা যেন দেবদূতের মতো। বাসে চাপার আগে বার বার নিজের মনেই বিড়বিড় করে বলে উঠে মহেশ্বর, তোমার এই উপকার জন্মজন্মান্তরেও ভুলব না। আর যিনি এই ধরনের সমাজ সেবা অহরহ করে থাকেন সেই বাপ্পা কিন্তু এখনো চিন্তায়, মহেশ্বর ঠিক মতো বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছে কিনা? কারন মহেশ্বরের কাছে কোনো ফোন নেই যে খোঁজ নেবেন।