ডাক্তার প্রশান্ত কুমার ঝরিয়াৎ
আমাদের ভারত, ১ ডিসেম্বর: কথায় বলে বাঙালি নাকি পেট রোগা। আলু, কাঁচকলা আর পেঁপের ঝোল থেকে একটু ব্যতিক্রম হলেই অম্বলের সমস্যা। নিদেনপক্ষে কই, শিঙ্গি আর মাগুর মাছের ঝোল, বড় পাকা রুই, ওরে বাবা গল ব্লাডার ধাক্কা মারবে, সে যে পেটের মধ্যে আছে জানান দেবে। আবার এর উপরে পেট ও নিত্যদিন সাফ হয় না, পেট সব সময় ভার হয়ে আছে, ক্ষিধেও ঠিক মতো হচ্ছে না।
উপরের এই সব লক্ষণগুলি মনে হচ্ছে তো অনেকটা নিজের সাথে মিলে যাচ্ছে। আসুন আজ আমরা দেখি এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কী।
অতিরিক্ত তেল, ঝাল, মশলাদার খাবার, জাঙ্ক ফুডের অতিরিক্ত ব্যবহার, বহুক্ষণ খালি পেটে থাকা, অতিরিক্ত চা, সিগারেট, তামাম খাওয়া, মদ্যপান করা, অত্যধিক দুঃশ্চিন্তা করা অম্বল বা অ্যাসিডিটি প্রধান কারন।
এবারে দেখা যাক কোন কোন হোমিওপ্যাথি ওষুধ অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
গুরুপাক খেয়ে বদহজম হলে বা রাত্রি জাগরণের জন্য অম্বল হলে নাক্সভোমিকা যে অব্যর্থ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। গলা, বুক জ্বালা করছে, জ্বালাকর জল মুখে উঠে আসছে, আইরিশ ভার্স ওষুধ টি আপনাকে নিরাশ করবে না। ক্যাপসিকাম ঔষধটিও ক্ষেত্র বিশেষে এখানে কার্যকরী।
বিকেল ৪টে থেকে ৬টা পর্যন্ত রোগ লক্ষণ বৃদ্ধি, ক্ষিধে পেলে সহ্য না করতে পারা লাইকপোডিয়ামের নিজস্ব লক্ষণ।
বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত পেট ভার হয়ে থাকে, দুর্গন্ধময় বায়ু নিঃসরণ হলে একটু আরাম হয়। এই রকম লক্ষণে কার্বোভেজ অত্যন্ত উপকারী ওষুধ।
গোটা পেট ভার হয়ে আছে, বিশেষত কোনও কঠিন রোগ ভোগের পর অম্বলের সমস্যা হলে চায়না আপনাকে নিরাশ করবে না। গলব্লাডার সম্পর্কিত সমস্যায় এটি ভালো কাজ করে। চর্বি বা ভাজা জিনিষ খেয়ে বদহজম হলে পালসেটিলা ঔষধটি যে অব্যর্থ তা বোধহয় আমি না বললেও আপনারা জানেন।
অম্বলে দাঁত সব সময় টক হয়ে আছে এরূপ লক্ষণে রোবিনিয়া কে স্মরণ করুন, বিফল হবেন না। এছাড়াও রুগীর লক্ষণ বিচার করে আরও অনেক হোমিওপ্যাথি ওষুধ আছে যেগুলি অম্বল নিরাময়ে অনেক কার্যকরী, একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি ডাক্তারবাবুর সঙ্গে আলোচনা করে ওষুধ গুলির মাত্রা ঠিক করে নেবেন। তবে মনে রাখবেন অ্যাসিডিটি কিন্তু অনেক সময় অনেক রোগের লক্ষণ হতে পারে, তাই একে অবহেলা না করে সঠিক চিকিৎসা করান।বেঠিক খাদ্যাভ্যাস, অনেকক্ষণ খালিপেটে থাকা, অতিরিক্ত তেল, ঝাল, মশলাদার খাবার এবং অনাবশ্যক টেনশন কে দূরে সরিয়ে রাখলেই অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।