পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ এপ্রিল: দিঘার বহু প্রতীক্ষিত জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদঘাটন অনুষ্ঠান এবং প্রাণ প্রতিষ্ঠার মহাযজ্ঞে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণপত্র ও কার্ড দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হলো পশ্চিমবঙ্গ অখিল ভারত হিন্দুমহাসভার রাজ্য কমিটির সদস্যদের। শুধু তাই নয়, অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথির সম্মান দেওয়া হয়েছে হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীকে।
এই বিষয়ে ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, আমরা বিষয়টাকে সনাতনের জয় এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নেওয়া একটি শুভ উদ্যোগ হিসেবে দেখছি। আজ সারা পৃথিবী যখন ধর্মীয় ও রাজনৈতিক হানাহানিতে রক্তাক্ত তখন একমাত্র সনাতন ধর্মই পারে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে। কারণ সনাতনী হিন্দু সংস্কৃতিই সারা পৃথিবীকে শিখিয়েছে, “বসুধৈব কুটুম্বকম।” অতীতে রামমন্দির পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনেও হিন্দু মহাসভা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে যে কোনো সরকার বা প্রতিষ্ঠান যদি মন্দির প্রতিষ্ঠার মত শুভ অনুষ্ঠানে হিন্দু মহাসভাকে সসম্মানে আমন্ত্রণ জানায় তাহলে রাজনৈতিক মতপার্থক্য ভুলে হিন্দু মহাসভা অবশ্যই সেখানে উপস্থিত থাকবেন। সরকারি টাকায় মন্দির নির্মাণের ব্যাপারে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। সরকারি টাকায় অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ যদি সাবসিডি পেয়ে নিজেদের তীর্থক্ষেত্রে যেতে পারেন তাহলে সনাতনী হিন্দুদের বেলায় সমস্যা কোথায়?
ভারত ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলে সেখানে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরুর বিভাজন করাটাও এক অর্থে সাম্প্রদায়িকতার নামান্তন। তাছাড়া আমাদের সবাইকে মাথায় রাখতে হবে, কোনো জায়গায় মন্দির নির্মাণ হলে একদিকে যেমন ঈশ্বরের আরাধনা করা হয় আবার অন্য দিকে সমাজে অর্থনৈতিক বণ্টন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক বেড়ে যায়। মন্দিরে ভক্তদের দানে গরীব- দুঃখী মানুষদের দুই বেলা ঠাকুরের ভোগ প্রসাদ গ্রহণের সুযোগ হয়। আবার প্রয়োজনের তাগিদেই মন্দিরকে কেন্দ্র করে নিকটবর্তী অঞ্চলে ফুল, ভোগ, মিষ্টান্ন, ডালা, মাটির পাত্র ইত্যাদি একাধিক ছোট বড় শিল্প গড়ে ওঠে। তাছাড়া স্টেশনারি দোকান এবং যানবাহনের ক্ষেত্রেও মন্দির অঞ্চলে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়।
আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গের দেখানো পথে ভারতের সব রাজ্যেই এইভাবে সরকারি উদ্যোগে বড় বড় মন্দির গড়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী।