১৪ মাসের ছেলের জন্য বাবা মায়ের কাতর আবেদন

আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ১৬ জানুয়ারি: মাত্র চৌদ্দ মাস বয়সের পুত্র সন্তান। তার নাভির পাশে প্রতিদিন তিনবেলা সুঁচ ফুটিয়ে ইনসুলিন দিতে হয়। সেই কাজ করার সময় বুক ফেটে কান্না বের হয়। তবুও রক্ষা করা যাচ্ছে না কোলের সন্তানকে। প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসার, যা করতে তাদের ছেলেকে নিয়ে যেতে হবে সুদূর ব্যাঙ্গালোরে। কিন্ত হতদরিদ্র দিনমজুর বাবার কাছে সেটা দুঃস্বপ্নের। তাই রায়গঞ্জের পশ্চিম মিলনপাড়ার বাসিন্দা কাঠমিস্ত্রীর লেবার মানিক ভৌমিক ও তাঁর স্ত্রীর সকলের কাছে কাতর আর্তি আর্থিক সাহায্যের।

মানুষ তাদের আর্থিক সাহায্য করলে চিকিৎসা করাতে পারবেন ১৪ মাস বয়সের ৭০০ সুগারের রোগী মনীষের। হতদরিদ্র বাবা-মায়ের দুই ছেলে নিয়ে সংসার প্রতিপালন করাই দুঃসাধ্য, সেখানে কিভাবে কোলের ছোট্ট শিশুর জন্য অর্থ খরচ করে ব্যাঙ্গালোরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাবেন তা ভেবেই অকুল পাথারে ভৌমিক দম্পতি। পাড়ায় পাড়ায় দুয়ারে দুয়ারে ছেলের চিকিৎসার জন্য অর্থ সাহায্যের জন্য ছুটে চলেছেন তাঁরা।

বড় ছেলের শুভমের বয়স মাত্র পাঁচ বছর, আর ছোটটা মনীষ কোলে মাত্র ১৪ মাস বয়স। কাঠমিস্ত্রীর লেবারের কাজ করে যা রোজগার হয় তাতে কোনওমতে দিন গুজরান চলে তাদের। গোটা বাড়ি জুড়ে দৈন্যদশার ছাপ স্পষ্ট। এরই মধ্যে গত ২১ ডিসেম্বর ছোট সন্তান মনীষ খেলতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। বুকে জড়িয়ে নিয়ে ছুটে যান রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে তৎক্ষনাৎ মনীষকে স্থানান্তর করে দেওয়া হয় মালদাতে। মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাথে সাথেই আইসিইউতে ভর্তি করে নেওয়া হয় মনীষকে। চিকিৎসকেরা জানতে পারেন ১৪ মাস বয়সী মনীষ হাই সুগারে আক্রান্ত। ৭০০ সুগারের রোগী ছোট্ট শিশু মনীষকে দিনে তিনবার ইনসুলিন দেওয়া শুরু হয়। ইনসুলিন বাড়িতে রাখার মতো রেফ্রিজারেটর নেই তাদের, বরফে ঢেকে রাখতে হচ্চে ইনসুলিন। বুকে পাথর চাপা দিয়ে দুধের এই শিশুকে রোজ তিনবার করে তলপেটে দিতে হচ্ছে সুঁই ফুটিয়ে ইনসুলিন। কিন্তু তাতেও নিরাময়ের কোনও লক্ষ্মণ না দেখায় মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎকেরা মনীষের দিনমজুর বাবা মানিক ভৌমিককে জানিয়ে দেন ব্যাঙ্গালোরে ছাড়া এই রোগের চিকিৎসা সম্ভব নয়।

চিকিৎসকদের মুখে এই কথা শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে মানিক ও তাঁর স্ত্রীর। তাদের দুই সন্তান নিয়ে তো দুবেলা পেট ভরে খেতেও পান না। ব্যাঙ্গালোরের মতো ভিনরাজ্যে গিয়ে কিভাবে ছোট্ট শিশুর চিকিৎসা করাবেন তাঁরা। ব্যাঙ্গালোরে গিয়ে ছোট্ট শিশুর চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে অর্থ সাহায্যের আবেদন করেন ভৌমিক দম্পতি। অর্থ সংগ্রহের জন্য এপাড়া থেকে ওপাড়া, দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু তাতেও জোগাড় হচ্ছে না চিকিৎসার খরচ। তাহলে কি চৌদ্দ মাস বয়সেই নিভে যাবে যাবে মনীষের জীবনদীপ। ডুকরে ডুকরে কেঁদে মায়ের কাতর আর্তি সকলে মিলে একটু একটু করে অর্থ সাহায্য করে তাঁর দুধের শিশু মনীষকে ফিরিয়ে আনুন সুস্থ জীবনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *