আমাদের ভারত, ১ ফেব্রুয়ারি:করোনার মতো অতিমারি পরিস্থিতি আর টিকাকরনের জন্য এবার বাজেট খাতে যে বরাদ্দ বাড়বে তা আগে থেকেই আশা করা হচ্ছিল। আর সেই মতই বাজেট পেশ করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রীর নির্মলা সীতারামন বললেন, স্বাস্থ্য ভালো থাকলে দেশ ভালো থাকবে এই ভাবনাকে গুরুত্ব দিয়ে দেশের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের পরিমান ১৩৭ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী জানালেন, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে স্বাস্থ্যখাতে ২ লক্ষ ২৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করবে কেন্দ্র।
গতবছর বাজেটে দেশের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল ৯৪ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। ভারতের মতো দেশে এই অংকটা বেশ কম বলেই মন্তব্য করেছিলেন বহু বিশেষজ্ঞ। তবে এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে সমালোচনার কোনো সুযোগ দেননি অর্থমন্ত্রী।বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অতিমারিই এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছে। করোনা টিকাকরনের জন্য ৩২ হাজার কোটি টাকা খরচের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৬৪ হাজার ১৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর স্বাস্থ্য যোজনার জন্য। এই টাকা আগামী ছয় বছরে খরচ করবে কেন্দ্র।
স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তিনটি মূল বিষয়, রোগ প্রতিরোধ, রোগের চিকিৎসা ও দেশবাসীর সার্বিক ভালো থাকার জন্য খরচ করা হবে এই অর্থ। দেশের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এই তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছেন অর্থমন্ত্রী। এছাড়াও জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের ক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে বাজেটে। ১৫টি নতুন জরুরী স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র তৈরি করবে সরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-র জন্য একটি স্থানীয় গবেষণা কেন্দ্র এবং ভাইরাস নিয়ে গবেষণার জন্য চারটি নতুন গবেষণাগারে তৈরি হবে।
এছাড়াও স্যানিটাইজেশনের পাশাপাশি জল এবং বায়ু দূষণ রুখতে বরাদ্দ করা হয়েছে 8৮২ হাজার কোটি টাকা।
নির্মলা সীতারামণ বলেন, গত অর্থবর্ষে ৯৪ হাজার ৪৫২ কোটি টাকার থেকে অনেকটা বাড়িয়ে ২ লক্ষ ২৩ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে এবারের স্বাস্থ্য খাতের বাজেট। পাশাপাশি অর্থমন্ত্রী স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় বাজেট বাড়ানো শুধু নয়, সরকারের ঘরে ফান্ড যত বাড়বে সরকারের তরফে বাজেটে আরো বেশি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কথা মাথায় রেখে এই বাজেট করা হয়েছে। এই বাজেটে যেমন অসুখ-বিসুখ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য পদক্ষেপ এবং অসুখ হলে চিকিৎসা দিকটিতেও নজর দেওয়া অর্থাৎ সামগ্রিক সুস্থতা দিকে সরকার ভাবছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি অত্যন্ত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত মনে করছেন সকলে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বাজেট পেশের আগেই স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বরাদ্দ বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছিলেন দেশের বেশ কয়েকজন অর্থনীতিবিদ ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বারবারই বলেছিলেন, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিকাঠামোর উন্নতিতেই লুকিয়ে আছে অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি। সম্ভবত এবার তাদের পরামর্শ মেনে নিয়েই স্বাস্থ্য খাতে ১৩৭ বরাদ্দ বাড়িয়ে দিলেন অর্থমন্ত্রী।