সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৯ জুন: রাজ্যজুড়ে হকার উচ্ছেদের আবহে বাঁকুড়া পুরসভা ফুটপাত থেকে হকারদের সরে যাওয়ার নির্দেশ জারি করতেই শহরজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। আজ দুপুরেই মাইকে এই নির্দেশ ঘোষণা করা হয়। আগামী তিন দিনের মধ্যে শহরের ফুটপাত সহ সরকারি জায়গা থেকে সমস্ত রকমের জবরদখল সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। তারপরই পুরসভা ও জেলা প্রশাসন একযোগে অভিযানে নামবে। মাইকযোগে এই নির্দেশ ঘোষণা হতেই শহরজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ফটপাতে যে সব হকাররা বসে ব্যবসা করেন তারা এই নির্দেশ শুনেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাদের বক্তব্য, একেই বাজারের পরিস্থিতি বেশ মন্দা, বাজার নেই, সংসার চালানো দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে, এবার যদি ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে পরিবারের কি হাল হবে। না খেয়ে মরতে হবে। সরকারের তো এই বিষয়ে ভাবনা থাকা দরকার।
বড়বাজার, মাচালতলায় ফুটপাতে হকারি করে সংসার চালায় হারু দাস, গৌতম মল্লদের বক্তব্য, কোনও কাজ নেই, ঘরে বৃদ্ধ মা সহ ছ’ জন পোষ্য হকারি করে কোনও প্রকারে দিনযাপন করি। এবার তো তাও বন্ধ হয়ে যাবে। খাবো কি?
অপরদিকে পুরসভার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন নাগরিকদের একাংশ। তাদের বক্তব্য, দোকানদার আর হকাররা যেভাবে রাস্তা দখল করেছে তাদের উচ্ছেদ ছাড়া কোনও উপায় নেই। দেবাশিষ পাল, স্বরাজ চ্যটার্জি বলেন, হকারদের চেয়ে বেশি দোষী একশ্রেণির দোকানদার, তাদের দোকান থাকা সত্বেও কেন রাস্তা দখল করে দোকানের মালপত্র নামিয়ে রাখেন। পুরসভা কি পারে না এদের জরিমানা করতে।
বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুনীল রুদ্র মন্ডল বলেন, হকার উচ্ছেদ বন্ধ করতে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে, তা সত্ত্বেও উচ্ছেদের নির্দেশ কিভাবে হয়? তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তা ভাবনা করছি। পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ হলে আন্দোলন হবে।
পুরপ্রধান অলকাসেন মজুমদার বলেন, আজই ফুটপাত থেকে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনদিন সময় দেওয়া হয়েছে, ফুটপাত থেকে মালপত্র সরিয়ে ফেলার জন্য। তারপরেই অভিযান শুরু হবে। তিনি বলেন, ফুটপাত ছাড়াও জুনবেদিয়া সহ শহরের কিছু এলাকায় ড্রেনের উপর সিমেন্টের স্ল্যাব বসিয়ে দখল করা হয়েছে, সেগুলিও সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।