আলিপুরদুয়ারে হরিতালের মৃত্যু, বার্ড -ফ্লুর আতঙ্ক

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ৫ জানুয়ারি: করোনা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। এরমধ্যেই আলিপুরদুয়ার জেলার একাংশতে বার্ড-ফ্লু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নেপথ্যে রয়েছে কিছু পাখির মৃত্যু।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের এক্কেবারে লাগোয়া মাদারিহাট শহরে গত একসপ্তাহে অন্তত ৩০-৫০টির মত বুনো পায়রার মৃত্যু হয়েছে। হরিতাল বা ইয়োলো ফুটেড গ্রিন পিজিয়ন যথেষ্টই পরিচিত একটি পাখি আলিপুরদুয়ারে। প্রায় পায়রার মত দেখতে, শহরে জঙ্গলের লাগোয়া এলাকায় এখনো যথেষ্টই উপস্থিতি রয়েছে। একসাথে অতীতে এতগুলি এই প্রজাতির পাখির মৃত্যুর খবরের নজির পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই নানা প্রশ্ন উঠেছে। তাহলে কি পশ্চিমবঙ্গের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন এলাকায় তার প্রাদুর্ভাব দেখা দিল?

জানা গেছে, মাত্র সাত দিনে আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট হাইস্কুল চত্বর থেকে বেশ কিছু হরিতালের দেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। এছাড়াও মাদারিহাটের অশ্বিনীর নগর ও রবীন্দ্র নগর এলাকা থেকেও বেশ কিছু দেহ উদ্ধার হয়।
জানা গেছে, ইতিমধ্যেই দেশের একাধিক রাজ্যে বার্ডফ্লু নিয়ে হাইএলার্ট জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।রাজস্থান,গুজরাট, মধ্যেপ্রদেশ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি মারা পড়েছে।
ঝাড়খন্ডে, হিমাচলপ্রদেশের থেকেও পাখিদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এদিকে রাজ্য বনদপ্তরের হাতে ওই রোগ পরীক্ষার কোনো পরিকাঠামো না থাকায় বনকর্তারা বাধ্য হয়েছেন স্থানীয় প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের দ্বারস্থ হতে।
সোমবার সব মিলিয়ে মাদারিহাটের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন এলাকায় ১০টি হরিতালের দেহ উদ্ধার হয়। গত ২৮ ডিসেম্বরও মাদারিহাটের ওই নির্দিষ্ট এলাকাগুলি থেকে হারিতালের বেশ কিছু দেহ উদ্ধার হয়। এরপরই জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে। ইতিমধ্যেই দেহগুলো জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ সংগ্রহ করে ময়নাতদন্ত শুরু করেছে।

জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও কুমার বিমল জানিয়েছেন,”পাখিগুলোর মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আমরা কোনো সম্ভাবনাই খারিজ করছি না।প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন বিভাগের সাথে,পাখি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে ওই মৃতদেহের নমুনা কলকাতার পরীক্ষাগারেও পাঠানো হচ্ছে। রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

পরিবেশ প্রেমী সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন “দেশে( বেশ কিছু রাজ্যে বার্ড-ফ্লু আতঙ্ক ছড়িয়েছে।জলদাপাড়া লাগোয়া এলাকায় বুনো পায়রার মৃত্যু যথেষ্টই উদ্বেগজনক।” উল্লেখ্য, হরিতাল সাধারণত গাছেই থাকে।খুব প্রয়োজন না হলে মাটিতে নেমে আসে না। পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্রই পাখিটির অস্তিত্ব রয়েছে। খুব সুন্দর হলদে সবুজে মোড়া পাখিটি মহারাষ্ট্রতে রাজ্য পাখির মর্যাদা পেয়েছে। শুধু জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পই নয় তাতপর্যপুর্নভাবে পাখিটিকে আলিপুরদুয়ার জেলা শহরেও সারাবছরই দেখা যায়। তবে অস্বাভাবিকভাবে মারা পরার নজির নেই। পাখি প্রেমীদের একাংশ এও জানিয়েছেন, যদি বার্ড ফ্লু নাও হয় তবে কোনও দূষণের জেরে এমন ঘটনা ঘটলো কিনা তাও খতিয়ে দেখা দরকার দ্রুত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *